Sero Survey

সেরো-সমীক্ষায় ছ’মাসের ছবি

দ্বিতীয় দফার সমীক্ষায় কলকাতার কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলিকে রাখা হয়নি।

Advertisement

সৌরভ দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:১৫
Share:

ছবি এএফপি।

সংক্রমণের গতিবিধি বুঝতে দ্বিতীয় দফার সেরো-সমীক্ষা শুরু হয়ে গেল রাজ্যে। শুক্রবার এ কথা জানিয়েছেন নাইসেড অধিকর্ত্রী শান্তা দত্ত।

Advertisement

বৃহস্পতিবার প্রথম দফার সমীক্ষার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে আইসিএমআর(ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ)। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মে মাসেই সারা দেশে সংক্রমিতের সংখ্যা ৬৪ লক্ষ ছিল বলে সেরো-সমীক্ষায় ইঙ্গিত মিলেছে। সেই ইঙ্গিতের বাস্তব ভিত্তি কতখানি, তা বুঝতে হলে দ্বিতীয় দফার সমীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

সেরো-সমীক্ষায় গোষ্ঠীতে বসবাসকারী মানুষজনের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে ইমিউনোগ্লোবিন (আইজিজি) অ্যান্টিবডির অস্তিত্ব রয়েছে কি না, তা দেখা হয়। কারও দেহে আইজিজি অ্যান্টিবডির অস্তিত্ব মিললে বুঝতে হবে, তিনি অতীতে সংক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। প্রথম দফায় এ রাজ্যের বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, আলিপুরদুয়ারের পাশাপাশি কলকাতার কন্টেনমেন্ট জ়োন থেকেও রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল বলে খবর। দ্বিতীয় দফার সমীক্ষায় কলকাতার কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলিকে রাখা হয়নি। প্রথম দফার সমীক্ষার যে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানেও কলকাতার কন্টেনমেন্ট জ়োনের ছবি তুলে ধরা হয়নি।

Advertisement

রাজ্যের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, প্রথম দফার সমীক্ষায় (১১ মে - ৪ জুন) সীমাবদ্ধতা কম ছিল না। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ৭৩৬টি জেলাকে আক্রান্তের সংখ্যার মাপকাঠিতে চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। আলিপুরদুয়ার, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামের নাম ছিল আক্রান্তের সংখ্যা শূন্য বা খুবই কমের তালিকায়। মাঝারি মাপের আক্রান্তের সংখ্যার তালিকায় ছিল পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা। প্রথম দফার সমীক্ষার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টে আক্রান্তের সংখ্যা বেশির তালিকায় এ রাজ্যের কোনও জেলার নাম নেই।

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য বলছে, প্রথম দফার সমীক্ষার সময়কালের (১১মে-৪ জুন) মধ্যে আলিপুরদুয়ার (১২), বাঁকুড়া (৯৫), ঝাড়গ্রাম (৬), পূর্ব মেদিনীপুর (১২৫) এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় (২২১) মোট আক্রান্তের সংখ্যা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। শুক্রবারের পরে আলিপুরদুয়ারে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩১৫৪ জন। বাঁকুড়া (৩৬৭৬), পূর্ব মেদিনীপুর (৮২৪১) এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও (১৩৩০৬) আক্রান্তের সংখ্যায় বৃদ্ধির বাড়বাড়ন্ত স্পষ্ট। ব্যতিক্রম শুধু ঝাড়গ্রাম। তিন মাসে সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছয় থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৪৯। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী অন্য জেলাগুলির বৃদ্ধির তুলনায় যা অত্যধিক কম। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আইসিএমআরের নির্দেশিকা মেনে নমুনা পরীক্ষা ঠিকমতো হচ্ছে কি না তা নির্ণয়েও দ্বিতীয় দফার সমীক্ষার ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

এ দিন আইসিএমআর-নাইসেডের অধিকর্ত্রী শান্তা দত্ত বলেন, ‘‘যত দিন যাবে গোষ্ঠীতে অ্যান্টিবডি পাওয়ার সম্ভাবনা তত বাড়বে। রাজ্যের প্রথম আক্রান্তের সন্ধান মেলার দু’মাসের মধ্যে প্রথম দফার সমীক্ষা হয়েছিল। দ্বিতীয় দফার সমীক্ষায় ছ’মাসের ছবি ধরা পড়বে। বছরখানেক পরে তৃতীয় দফায় আরেকটি

সমীক্ষা হবে। সংক্রমণের গতিবিধি বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে তিন ধরনের সময়পর্বে সমীক্ষার প্রয়োজন হয়। তাহলে সংক্রমণ বাড়ছে না কমছে তা বোঝা যায়।’’ তিনি জানান, গোষ্ঠীতে আইজিজি অ্যান্টিবডি পজ়িটিভের সংখ্যা বেশি মাত্রায় পাওয়া গেলে বুঝতে হবে সংক্রমণের প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন