আট পরীক্ষার্থীকে ছাড়

ঘেরাও ছেড়ে অনশনে দাবি আদায়ের চেষ্টা

ন্যূনতম হাজিরা নেই। তবু পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন চলছে মঙ্গলবার থেকে। যে-সব ছাত্রছাত্রীর হাজিরা কম আছে, অনুপস্থিতির কারণ বিবেচনা করে এ দিন তাঁদের মধ্য থেকে আট জনকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:৩০
Share:

ফাইল চিত্র।

শিক্ষকদের ঘেরাও এবং অবস্থান দিয়ে শুরু হয়েছিল আন্দোলন। বুধবার ঘেরাও বাদ দিয়ে ধর্না-বিক্ষোভ চালানো হচ্ছিল। পরে পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার দাবিতে অনশন শুরু করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের পড়ুয়াদের একাংশ।

Advertisement

ন্যূনতম হাজিরা নেই। তবু পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন চলছে মঙ্গলবার থেকে। যে-সব ছাত্রছাত্রীর হাজিরা কম আছে, অনুপস্থিতির কারণ বিবেচনা করে এ দিন তাঁদের মধ্য থেকে আট জনকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু আর কোনও ছাত্র বা ছাত্রীকে এমন অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়।

হাজিরায় ছাড় দিয়ে সব পড়ুয়াকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার দাবিতে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত শিক্ষকদের আটকে রাখেন পড়ুয়ারা। উপাচার্যের মধ্যস্থতায় শিক্ষকদের পরে বাড়ি যেতে দেওয়া হয়। কিন্তু পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে উপাচার্য লক্ষ করেন, আন্দোলনকারীদের মধ্যে কিছু ‘বহিরাগত’-ও আছেন। পড়ুয়াদের নিরাপত্তার খাতিরে দুই সহ-উপাচার্যকে নিয়ে সারা রাত বিশ্ববিদ্যালয়েই থেকে যান উপাচার্য।

Advertisement

মঙ্গলবার উপাচার্য জানিয়েছিলেন, ন্যূনতম হাজিরা ছাড়া কোনও পড়ুয়াকেই পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষায় বসতে হলে কমপক্ষে ৬৫% হাজিরা থাকতে হয়। ৫৫% হাজিরা থাকলে ১০০ টাকা জরিমানা দিয়ে পরীক্ষায় বসা যায়। বাংলার প্রথম ও তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ৭৮ জনের প্রয়োজনীয় হাজিরা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের খবর, সোমবারের বৈঠকে কোনও সমাধানসূত্র পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার বৈঠকের পরে কর্তৃপক্ষের তরফে পড়ুয়াদের জানিয়ে দেওয়া হয়, হাজিরার নিয়মে কোনও শৈথিল্য দেখানো হবে না। তার পরেই বাংলা বিভাগের চার শিক্ষককে ঘেরাও করা হয়। এ দিন কর্তৃপক্ষ এই নিয়ে ফের বৈঠকে বসেন। রাতে আসতে হয় উপাচার্যকেও।

এ দিন ঠিক হয়, অসুস্থতা এবং বন্যার জন্য যে-আট জন পড়ুয়া ক্লাসে হাজির হতে পারেননি, তাঁদের পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হবে। তবে উপাচার্য জানিয়ে দেন, আর কাউকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া যাবে না। ২৭ ফেব্রুয়ারি ওই ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা।

আন্দোলনকারীদের তরফে দেবাঞ্জলি ভট্টাচার্যের অভিযোগ, পড়ুয়ারা ক্লাস করেছেন। কিন্তু বাংলা বিভাগ থেকে হাজিরা যথাযথ ভাবে নথিভুক্ত করা হয়নি। নিরুপায় হয়েই পড়ুয়ারা অনশনে বসেছেন।

গত বছরেও বাংলা বিভাগের বহু পড়ুয়ার ন্যূনতম হাজিরা ছিল না। তা সত্ত্বেও পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার দাবি তোলেন তাঁরা। শেষে উপাচার্যের হস্তক্ষেপে বিশেষ ক্লাস নিয়ে তাঁদের হাজিরার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছিল।

শিক্ষা শিবিরের একাংশের মতে, সম্প্রতি পাশ-ফেল নিয়ে নরম অবস্থানের পরে এ বার হাজিরা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ কড়া হতে চাইছেন। উপাচার্য বলেন, ‘‘হাজিরা নিয়ে পুরনো নিয়ম মানতে বলছি আমরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং সংশ্লিষ্ট সব কলেজের ক্ষেত্রেই এই নিয়মবিধি প্রযোজ্য। নিয়ম না-মানলে বিশৃঙ্খলা আরও বেশি করে ছড়িয়ে পড়বে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন