মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
আগামী সোমবার থেকে বসছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন। ১ থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে এই অধিবেশন। তৃণমূল পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, বিজেপিশাসিত একাধিক রাজ্যে বাংলায় কথা বললেই বাংলার শ্রমিকদের ‘বাংলাদেশি’ বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে— এই ইস্যুতেই মূলত আলোচনা হবে। ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে, বাইরে কাজ করতে যাওয়া বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার চালানো হচ্ছে। এমনকি, বলপূর্বক বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে বলে দাবি রাজ্যের শাসকদলের। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে বিধানসভায় প্রস্তাব আনা হবে এবং তৃণমূল চাইছে এ নিয়ে সর্বসম্মত নিন্দা প্রস্তাব পাশ হোক।
পাশাপাশি ভারতের নির্বাচন কমিশনের শুরু করা বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা বা স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (এসআইআর) নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলে খবর। ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়ায় বিশেষ নজরদারি, নাম কেটে দেওয়া বা নতুন নাম অন্তর্ভুক্তির বিষয়গুলি নিয়ে রাজ্য সরকার তাদের অবস্থান পরিষ্কার করতে পারে। ফলে এই অধিবেশনে রাজনৈতিক টানাপড়েন আরও বাড়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এই আলোচনায় অংশ নেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্যেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের। পাশাপাশি বিধানসভায় উপস্থিত থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়াবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফলে বিশেষ অধিবেশনে শাসক এবং বিরোধী দুই শিবিরের মুখোমুখি সংঘাত তীব্র আকার নেবে বলে ধরে নিচ্ছেন অনেকেই।
তবে ৩ সেপ্টেম্বর করম পুজোর সরকারি ছুটি থাকায় অধিবেশন বসবে ১, ২ এবং ৪ সেপ্টেম্বর। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই বিশেষ অধিবেশনে রাজ্যের শাসক এবংবিরোধী শিবিরের মধ্যে তীব্র তরজা এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব পেশের মধ্য দিয়ে তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিধানসভা ভোটের আগে বাংলার পরিচয়, ভাষা ও পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তার প্রশ্নকে সামনে রেখে তৃণমূল জনমত গঠনের চেষ্টা করছে। অন্যদিকে বিজেপি এই অধিবেশনকে ব্যবহার করতে পারে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণের মঞ্চ হিসাবে। সব মিলিয়ে, মাত্র তিন দিনের অধিবেশন হলেও তা ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা ইতিমধ্যেই তুঙ্গে। আগামী সপ্তাহে বিধানসভার অন্দরেই নয়, বাইরে রাজ্য রাজনীতির ক্ষেত্রেও এই অধিবেশনের প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছেন অনেকে।