মহুয়া ভট্টাচার্য। নিজস্ব চিত্র
ক্যানসার আক্রান্ত দুঃস্থ রোগীদের জন্য পরচুলা বানানোর কাজে চুল দান করলেন দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা মহুয়া ভট্টাচার্য। বিধাননগর সমবায় আবাসনের বাসিন্দা মহুয়াদেবী তামিলনাড়ুর একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে এই কাজ করেছেন। অন্যদেরও এই কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ওই শিক্ষিকা জানান, বছর দেড়েক আগে টেলিভিশনে একটি খবরে দেখেন, একটি শিশু ক্যানসার আক্রান্তের জন্য পরচুলা বানাতে চুল দান করেছে। তা দেখে তিনি উৎসাহিত হন। চুল বাড়াতে থাকেন তিনি। পাশাপাশি, ইন্টারনেটে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সন্ধান পান। সংস্থাগুলি দুঃস্থ ক্যানসার রোগীদের জন্য পরচুলা বানিয়ে থাকে। মহুয়াদেবী জানান, তামিলনাড়ুর ওই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। সংস্থাটি জানায়, চুল নিতে তারা রাজি। কিন্তু চুলদাতার কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ থাকতে হবে। ওই শিক্ষিকা জানান, তাঁদের আবাসনে গত ২৮ অগস্ট করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পরে তা পাঠিয়ে দিই ওই সংস্থার কাছে। চুলের দৈর্ঘ্যের ছবিও পাঠিয়েছিলাম। সংস্থাটি সম্মত হওয়ায় মঙ্গলবার স্পিড পোস্টে চুল পাঠিয়ে দিয়েছি। অন্যদেরও চুল দানে উৎসাহ দেওয়ার চেষ্টা করছি।’’
এই কাজে মহুয়াদেবী পাশে পেয়েছেন স্বামী বাসুদেব ভট্টাচার্য, দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ছেলে দেবাঞ্জনকেও। দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের কর্মী বাসুদেববাবু বলেন, ‘‘এ ভাবে চুল দান করে দুঃস্থ ক্যানসার রোগীদের পাশে অনেকেরই দাঁড়ানো উচিত।’’ এ দিকে, দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রজিৎ মাজি জানান, ক্যানসার রোগীর চিকিৎসায় রেডিয়েশন ব্যবহারের ফলে, রোগীর মাথায় চুল গজানোর সম্ভাবনা খুব কম। অনেকেই তাই পরচুলা ব্যবহার করতে বাধ্য হন। তবে, পশ্চিমবঙ্গে সরকারি স্তরে চুল সংগ্রহ করে ক্যানসার রোগীদের জন্য পরচুলা তৈরি করার ব্যবস্থা এখনও গড়ে ওঠেনি, জানান ইন্দ্রজিৎবাবু।