Anubrata Mandal

দশচক্রে কেষ্ট যখন শিব, তিহাড়ে বন্দি অনুব্রতকে নীলকণ্ঠের সঙ্গে তুলনা বীরভূমের তৃণমূল নেতার

যথারীতি শিব-মন্তব্য নিয়ে শাসক তৃণমূলকে আক্রমণ করেছে বিরোধী দলগুলি। এক জন অভিযুক্তকে শিবের সঙ্গে তুলনা করে বাংলার ‘সংস্কৃতির অপমান’ করা হয়েছে বলে মত তাদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৩ ১২:৫৫
Share:

অনুব্রতকে নীলকণ্ঠের সঙ্গে তুলনা করলেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা। ফাইল চিত্র।

নাম ‘কেষ্ট’ হলেও তুলনায় এসে পড়লেন শিব। গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নাম না করেই তাঁকে শিবের সঙ্গে তুলনা করলেন জেলারই এক তৃণমূল নেতা। যথারীতি শিব-মন্তব্য নিয়ে শাসক তৃণমূলকে আক্রমণ করেছে বিরোধী দলগুলি। এক জন অভিযুক্তকে শিবের সঙ্গে তুলনা করে বাংলার ‘স‌ংস্কৃতির অপমান’ করা হয়েছে বলে মত তাদের।

Advertisement

বীরভূমের তৃণমূল সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় শুক্রবার দলের একটি কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে বলেন, “যখন সমুদ্রমন্থন হয়েছিল, তখন অমৃতের সঙ্গে গরল উঠেছিল। আমরা জানি, অমৃত দেবতারা ভাগ করে খেয়ে নিলেও, গরল পান করার জন্য কাউকে পাওয়া যায়নি।” তার পরই পুরাণের আখ্যান থেকে সরাসরি রাজনীতির বাস্তবতায় নেমে এসে তিনি বলেন, “সবাই অমৃতটাই দেখছেন। কিন্তু আজ যিনি গরল পান করতে পারতেন, রাজনীতির প্যাঁচপয়জারে তাঁকেই দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে।” মলয় নির্দিষ্ট করে কারও নাম না করলেও জেলার রাজনীতি থেকে ভৌগোলিক ভাবে অনেকটাই দূরে থাকা অনুব্রতের দিকেই যে তিনি ইঙ্গিত করেছেন, তা স্পষ্ট। বিরোধীদের প্রশ্ন, গরল যদি অনুব্রতই খেয়ে থাকবেন, তবে অমৃত পান করলেন কারা? কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির তরফে দাবি করা অনুব্রতের বিপুল সম্পত্তির দিকে ইঙ্গিত করে তাঁদের আরও প্রশ্ন, এই যদি গরলের রূপ হয়, তবে অমৃত উদ্ধার হলে বাংলার মানুষকে আর কী কী দেখতে হবে?

Advertisement

মলয়ের মন্তব্য নিয়ে এখনও পর্যন্ত মুখে কুলুপ এঁটেছেন জেলার তৃণমূল নেতারা। অন্য দিকে, গত বুধবারই অনুব্রতের জামিনের আর্জি মুলতুবি হয়ে গিয়েছে দিল্লি হাই কোর্টে। আদালত জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ২৭ জুলাই পর্যন্ত এই মামলার শুনানি হবে না। যার অর্থ, অনুব্রতের দিল্লির তিহাড় জেলবাস আরও চার মাস বাড়তে পারে, যদি না তিনি উচ্চতর আদালতে জামিনের আবেদন করেন এবং সেই আবেদন মঞ্জুর হয়। ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়া অনুব্রত দিল্লি হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন তিহাড় থেকে আসানসোলে ফেরার জন্যও। জামিনের মামলার শুনানির পাশাপাশি অনুব্রতের সেই আর্জিরও শুনানি পিছিয়ে যায় ২৭ জুলাই পর্যন্ত। ফলে আগামী প্রায় চার মাস দিল্লি হাই কোর্টে অনুব্রত মামলার শুনানি না হওয়ায় তিহাড় জেলেই থাকতে হতে পারে অনুব্রতকে। একদা জেলা রাজনীতির অন্যতম নিয়ন্ত্রকের অনুপস্থিতিতে তাঁকে ‘শিবজ্ঞানে’ দেখা এবং গরল প্রসঙ্গ তোলার মধ্যে অন্য তাৎপর্য খুঁজে পাচ্ছেন কেউ কেউ। শাসক শিবিরে জল্পনা যে, মলয়ের মন্তব্যে জেলা রাজনীতির কোন্দল প্রকাশ্যে চলে এল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন