Calcutta High Court

মায়ের নাম লেখার অধিকার চেয়ে হাই কোর্টের শরণে

আদালতের খবর, একটি মামলা দায়ের করে আইনি পেশায় নাম নথিবদ্ধকরণে মাতৃত্বের অধিকার সংক্রান্ত প্রশ্নটি তুলেছেন মৃণালিনী মজুমদার নামে এক মহিলা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২২ ০৫:৩৬
Share:

কলকাতা হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।

মাতৃত্বের অধিকার নিয়ে আদালতে লড়াই করেন আইনজীবীরা। কিন্তু পেশায় তাঁদের নাম নথিবদ্ধকরণের সময় মায়ের স্থান কোথায়? একটি মামলায় কার্যত এই প্রশ্নই উঠেছে কলকাতা হাই কোর্টে। সেই মামলায় সম্প্রতি প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া এবং পশ্চিমবঙ্গ বার কাউন্সিলের জবাব তলব করেছে। চার সপ্তাহের মধ্যে আইন পেশা নিয়ন্ত্রণকারী দুই সংস্থাকে তাদের বক্তব্য কোর্টে জমা দিতে হবে।

Advertisement

আদালতের খবর, একটি মামলা দায়ের করে আইনি পেশায় নাম নথিবদ্ধকরণে মাতৃত্বের অধিকার সংক্রান্ত প্রশ্নটি তুলেছেন মৃণালিনী মজুমদার নামে এক মহিলা। মামলার আবেদনপত্রে বলা হয়েছে, বার কাউন্সিলে নাম নথিবদ্ধকরণের সময় বাবা কিংবা স্বামীর নাম দেওয়া যায়। কিন্তু মায়ের নাম দেওয়ার জায়গা নেই। অথচ অনেক মহিলাই একা সন্তানকে বড় করে তোলেন। তাঁদের সন্তানরা আইনি পেশায় যুক্ত হতে চাইলে কি রেজিস্ট্রেশন পাবেন না? মামলার আবেদনেও কার্যত একই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। মাতৃত্বের মর্যাদা দেওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা লজ্জাজনক বলেও আবেদনপত্রে মন্তব্য করা হয়েছে।

অনেকেরই প্রশ্ন, সন্তানের অধিকারের প্রশ্নে কেন মা এবং বাবা দু'জনেই সন্তানের স্বাভাবিক অভিভাবক হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন না। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে গীতা হরিহরণের মামলাতেও সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, বাবার জীবদ্দশাতেই মা-ও সন্তানের অভিভাবকের মর্যাদার অধিকারী। ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব জুরিডিক্যাল সায়েন্সেসের শিক্ষিকা রুচিরা গোস্বামীর কথায়, "আইনি বাধা না-থাকলেও অভিভাবক হিসেবে মাকে মানতে এক ধরনের পিতৃতান্ত্রিক সংস্কারের বাধা অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যার সৃষ্টি করে। এটা অন্যায়।" পাসপোর্টের মতো কয়েকটি ক্ষেত্রে এ দেশে মায়ের নামও অভিভাবক হিসেবে লেখা যায়। নারী অধিকার রক্ষা কর্মী তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির শিক্ষিকা শাশ্বতী ঘোষও বলেন, "এই যুগেও মায়ের নাম লেখার অধিকারের জন্য আমাদের লড়তে হচ্ছে, এটাই সব থেকে অন্যায্য।"

Advertisement

মৃণালিনীর মামলার আবেদনপত্রে বলা হয়েছে কেরল হাই কোর্ট একটি রায়ে জানিয়েছিল, জন্মের শংসাপত্র-সহ বিভিন্ন নথিতে শুধু মায়ের নাম দেওয়া যাবে। মা তথা নারীর সমানধিকারের দাবিতেই মৃণালিণী লড়ছেন বলে তাঁর আইনজীবীরা জানিয়েছেন। মৃণালিনীর আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি, পল্লবী প্রিয়দর্শী কোর্টে শুনানিতে জানান, বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া এবং পশ্চিমবঙ্গ বার কাউন্সিলকে এ বিষয়ে জানিয়েও তাঁরা কোনও উত্তর পাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন