ধর্ষণের পরে পড়ে রইলেন ১৮ ঘণ্টা!

দিল্লির নির্ভয়ার মতো তাঁর যৌনাঙ্গেও ধাতব কিছু ঢুকিয়ে আঘাত করা হয়। সঙ্কটজনক অবস্থায় তিনি এখন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট ও মালদহ শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৫৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

বাবা-মা মারা গিয়েছেন। স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক নেই। একাই থাকতেন একটি কুঁড়েতে। বছর আঠাশের সেই যুবতীকে শনিবার রাতে গণধর্ষণ করা হয়েছে। তারপরে দিল্লির নির্ভয়ার মতো তাঁর যৌনাঙ্গেও ধাতব কিছু ঢুকিয়ে আঘাত করা হয়। সঙ্কটজনক অবস্থায় তিনি এখন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। অবস্থা এতটা সঙ্কটজনক হত না, যদি আরও তাড়াতাড়ি তিনি চিকিৎসার সুযোগ পেতেন। মুখ্যমন্ত্রীর সফরের ঠিক মুখে এই ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে জেলা পুলিশ-প্রশাসনও।

Advertisement

দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমণ্ডির দেহাবন্ধ হাটপাড়ার এই যুবতীর দিন চলে প্রতিবেশীদের সাহায্যে। একা একা ঘুরে বেড়ান। শনিবার গিয়েছিলেন পতিরাজ এলাকায় শিবরাত্রির মেলায়। সন্ধে নাগাদ তাঁকে ইছামতী সেতুর নীচে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। তারপরে রবিবার বিকেল তিনটে পর্যন্ত সেখানেই পড়ে ছিলেন। কোনও ভবঘুরে শুয়ে আছে ভেবে প্রথমে কেউ আমল দেননি। পরে কয়েক জন কৃষকের সন্দেহ হয়। কাছে গিয়ে রক্তে ভেসে যাওয়া নগ্ন দেহ দেখে শিউরে ওঠেন তাঁরা।

তাঁকে তখন কুশমণ্ডি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার প্রায় ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টা পরে সেখানেই তিনি প্রথম বার চিকিৎসা পান। তবে ওই হাসপাতাল থেকে তাঁকে প্রায় সঙ্গে সঙ্গে রেফার করে দেওয়া হয় রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে। সেখানে তিন ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচারও হয়। কিন্তু বিপদ কাটেনি দেখে রবিবার রাত দু’টো নাগাদ তাঁকে পাঠানো হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে মেডিক্যাল টিম গড়ে চিকিৎসা শুরু হয়েছে। সোমবার সন্ধেয় আবার অস্ত্রোপচারও হয়। মেডিক্যালের সুপার অমিতকুমার দাঁ বলেন, ‘‘তরুণীকে ৭২ ঘন্টা পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। তার আগে কিছু বলা যাচ্ছে না’’

Advertisement

আরও পড়ুন: কী করছিল পুলিশ, প্রশ্ন

পুলিশ সোমবার দেহাবন্ধ এলাকারই এক জনকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, ঘটনার দু’দিন পরেও কেন সকলকে পাকড়াও করা যায়নি। তা ছাড়া, কুশমণ্ডি থানা খবর পেয়েও প্রথমে যেতে গড়িমসি করে বলে অভিযোগ। পুলিশের কাছে লিখিত ভাবে গ্রামবাসীরা দাবি করেছেন, তাঁরাই অটো করে ওই যুবতীকে হাসপাতালে নিয়ে যান। আদিবাসী সংগঠনের নেতা বুধন হেমব্রমের দাবি, ‘‘পুলিশ তৎপর ছিল না। তাই এই অবস্থা।’’

আরও পড়ুন: ঘুরতে হল হাসপাতালে হাসপাতালে

রাজ্য পুলিশের আইজি (আইনশৃঙ্খলা) অবশ্য বলেছেন, ‘‘পুলিশ খবর পাওয়ার পরপরই ওই যুবতীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘যৌন নিগ্রহের ঘটনা সহ্য করা হবে না। কড়া ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন