Abhijit Gangopadhyay

বিজেপির বিরুদ্ধে ‘ক্ষোভ’ উগরে দিলেন সাংসদ অভিজিৎ, প্রশ্ন তুললেন কেন্দ্রীয় সরকার ও সংস্থার ভূমিকা নিয়েও

বাংলায় ‘অবাঙালি বিজেপি নেতৃত্বের দাপট’ নিয়েও ‘অসন্তুষ্ট’ প্রাক্তন বিচারপতি। উত্তর ভারতের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের চিন্তাভাবনা মেলে না দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘হিন্দি বলয় থেকে এখানে নেতা এনে ভোট করানো যাবে না।’’

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৫ ০১:২৫
Share:

অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় সাংসদ তথা প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিধানসভা নির্বাচনের যখন খুব বেশি দেরি নেই, এমন পরিস্থিতিতে অভিজিতের বক্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েছে বঙ্গ বিজেপি শিবির। বৃহস্পতিবার ‘এবিপি আনন্দ’-এ সম্প্রচারিত সাক্ষাৎকারে ওই সাংসদ দাবি করেন, বিজেপির হয়ে তাঁর ভোটে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্য ছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমতা থেকে সরানো। তবে সেই ‘নিশানা’র ‘ধারেকাছে’ পর্যন্ত তিনি পৌঁছোতে পারেননি। এর দায় কেন্দ্রীয় সরকারের বলেই দাবি করেছেন অভিজিৎ। সেই সঙ্গে এ দিন তাঁর নিশানায় ছিল কেন্দ্রীয় এজেন্সি থেকে নির্বাচন কমিশন।

Advertisement

অভিজিতের কথায় উঠে এসেছে, ‘বাংলার আবেগকে বিজেপির বুঝতে না-পারা’র প্রসঙ্গও। তিনি বলেন, ‘‘কেন যে পশ্চিমবঙ্গের মতো একটা শাসনহীন, প্রশাসনহীন রাজ্যে অন্তত ৩৫৫ ধারা জারি করা হবে না, সেটা তো আমার কাছে একটা বিরাট প্রশ্ন।’’ তমলুকের সাংসদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি বদল করতে চায় না। অভিজিৎ মনে করেন, রাজ্যে পালাবদল করতে হলে পুলিশকে কেন্দ্রীয় সরকারের আওতায় নিয়ে এসে ভোট করাতে হবে। তা হলেই তৃণমূল ভোট দিতে যাওয়ার সময় কাউকে ‘বাধা’ দিতে পারবে না বা কোনও রকম অশান্তি তৈরি করতে পারবে না। তবে এ সব করলেও যে পরিবর্তন হবে সে সম্পর্কে বিজেপি সাংসদ নিশ্চিত নন। তিনি বলেছেন, ‘‘তার পর যদি তৃণমূল আসে, আসবে।’’

বাংলায় ‘অবাঙালি বিজেপি নেতৃত্বের দাপট’ নিয়েও ‘অসন্তুষ্ট’ প্রাক্তন বিচারপতি। উত্তর ভারতের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের চিন্তাভাবনা মেলে না দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘হিন্দি বলয় থেকে এখানে নেতা এনে ভোট করানো যাবে না।’’ কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মন, মেজাজ, তাঁদের অভিমান, এ সব দিল্লিওয়ালা নেতারা বোঝেন না।’’

Advertisement

নির্বাচন কমিশনের ‘কাজকর্ম’ নিয়েও ‘সন্দেহ’ প্রকাশ করেছেন অভিজিৎ। তাঁর দাবি, ভোটার তালিকায় ‘গন্ডগোল’ করার জন্য বেশ কয়েক জন আধিকারিকের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছিল কমিশন। তাঁদের সাসপেন্ড করা হলেও কারও বিরুদ্ধে এফআইআর করেনি রাজ্য সরকার। তবে তা না-করা হলেও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি কমিশন।

রাজ‍্যে শিক্ষায় নিয়োগ, আরজি কর কাণ্ড-সহ বিভিন্ন ইস্যুতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন বিচারপতি। ‘বড় বড়’ নেতাদের বিরুদ্ধে ‘গুচ্ছ গুচ্ছ’ অভিযোগ থাকলেও তদন্ত বা হেফাজতে নিয়ে জেরা করা সে ভাবে হচ্ছে না। সিবিআই, ইডি-র বেশ কিছু ‘বড়-মেজো কর্তা’ বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মদতপুষ্ট বলেও মনে করেন তিনি। কেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পারেননি কেন্দ্রীয় সংস্থার কর্তারা সেই ‘কৈফিয়ত’ প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে চাওয়া উচিত বলে মনে করেন বিজেপি সাংসদ।

বিজেপি-র পক্ষে তৃণমূলকে সরানো সম্ভব নয়, না কি বিজেপি তৃণমূলকে সরাতে চায় না, এই প্রশ্নের প্রেক্ষিতে অভিজিতের জবাব, ‘‘বিজেপি সরাতে চায় কি চায় না— এটা অনেক গভীর প্রশ্ন। সেই প্রশ্নে আজ যাব না।’’ তাঁর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য ‘‘কিছু দিন বাদে হয়তো যাব।’’

তমলুকের সাংসদের সাক্ষাৎকার সম্প্রচারিত হতেই অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে বিজেপি শিবিরকে। এই প্রসঙ্গে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘যথাযোগ্য জায়গায় ওঁর মতগুলি বললে তা নিয়ে আলোচনা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement