গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলায় সত্যজিৎ রায়ের পারিবারিক বাড়ি ভেঙে ফেলার ঘটনায় মঙ্গলবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সেই ঘটনায় সরব হলেন তৃণমূল সাংসদ তথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দাবি তুললেন, বাংলা সংস্কৃতিতে অতুলনীয় অবদান রাখা রায় পরিবারের পারিবারিক ভিটে সংরক্ষণের বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কথা বলুক ভারত সরকার।
বাংলাদেশের সংবাদপত্র ‘দ্য ডেলি স্টার’ এবং ‘প্রথম আলো’-র প্রতিবেদনে প্রথম এই খবর প্রকাশ্যে আসে। প্রকাশিত খবরে দাবি, ময়মনসিংহ শিশু অ্যাকাডেমি হিসেবে ব্যবহার করা হত জেলার সদর শহরের হরিকিশোর রায় রোডের প্রাচীন ওই বাড়ি। ‘প্রথম আলো’য় প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি, ২০০৭ সালের পর থেকে বাড়িটি অব্যবহৃত অবস্থায় ছিল। পরিত্যক্ত বাড়িটি ভেঙে তই বহুতল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনায় কাজ শুরু করছে শিশু অ্যাকাডেমি। ১৯৮৯ সালে তৎকালীন সেনাশাসক হুসেন মহম্মদ এরশাদের সময় ওই ভবনটি ব্যবহার শুরু করেছিল শিশু অ্যাকাডেমি।
অভিষেক তাঁর এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘‘অস্কারজয়ী চলচ্চিত্রনির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের পারিবারিক বাড়ি ভেঙে ফেলার ঘটনায় আমি মর্মাহত। এই শতাব্দীপ্রাচীন সম্পত্তিটি সত্যজিৎ রায়ের পিতামহ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ছিল, যিনি বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির এক অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব।’’ বাংলাদেশ সরকারের কাছেও ওই সম্পত্তি সংরক্ষণের আর্জি জানিয়েছেন অভিষেক। পাশাপাশি তিনি লিখেছেন, ‘‘বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা বাড়িটি রক্ষা করার জন্য ঢাকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করুক ভারত সরকার।’’
মমতার বক্তব্য ছিল, ‘‘রায় পরিবার বাংলার সংস্কৃতির অন্যতম ধারক ও বাহক। উপেন্দ্রকিশোর বাংলার নবজাগরণের এক স্তম্ভ। তাই আমি মনে করি, এই বাড়ি বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাসের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িত। আমি বাংলাদেশ সরকার ও ওই দেশের সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে আবেদন করব এই ঐতিহ্যশালী বাড়িটিকে রক্ষা করার জন্য। ভারত সরকার বিষয়টিতে নজর দিন।’’
মঙ্গলবার রাতেই এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে নয়াদিল্লি। কেন্দ্রের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের হাতে থাকা বাড়িটির সংস্কারের প্রয়োজন। বাড়িটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি এবং সেটিকে সাহিত্যের প্রদর্শশালা বানানোর প্রস্তাব দিয়ে বলা হয়েছে, তা সংরক্ষণ ও পুনর্নির্মাণে অর্থসাহায্য করতে রাজি নয়াদিল্লি।