Abhishek Banerjee Suvendu Adhikari

চোরের পাল্টা পকেটমার! নাম না করে শুভেন্দুকে তোপ অভিষেকের, সঙ্গে বললেন ছোটবেলার গল্পও

গত বুধবার মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ‘চোর’ স্লোগান দিয়েছিল বিজেপি পরিষদীয় দল। তা নিয়ে সোমবার বিধানসভার বক্তৃতায় মমতা বলেন, ‘‘আমি নাকি ওদের কাছে চোর! আমি মানুষের কাছে বোর হয়ে থাকব।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:১৪
Share:

(বাঁ দিকে) শুভেন্দু অধিকারী। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

গত সপ্তাহে পর পর কয়েক দিন বিধানসভা তপ্ত ছিল ‘চোর-চোর’ স্লোগান এবং পাল্টা স্লোগানে। তৃণমূল বিধায়কদের ধর্না থেকে কিছুটা দূরে হইচই শুরু করেছিল বিরোধীদল বিজেপি। বিধানসভায় সেই ‘চোর শোর’ নিয়ে নাম না করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে পাল্টা কড়া আক্রমণ শানালেন তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার অভিষেককে ওই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ওখানে যে সবচেয়ে বেশি চোর-চোর বলে চিৎকার করেছে, তাকে টিভিতে দেখা গিয়েছিল কাগজে মুড়ে ঘুষ নিতে।’’

Advertisement

এর পরেই ছোটবেলায় শোনা গল্পের কথা বলেন অভিষেক। তৃণমূল সাংসদের কথায়, ‘‘আমরা ছোটবেলায় শুনতাম, পকেটমাররা পকেটমারি করার পর কিছুটা দূরে সরে গিয়ে নিজেরাই চোর-চোর বলে চিৎকার করে! যাতে তার দিকে নজর না পড়ে।’’ সেই অনুষঙ্গেই অভিষেকের বক্তব্য, ‘‘২০২১ সালের ভোটের ফলপ্রকাশের দু’সপ্তাহের মধ্যে নারদ মামলায় সুব্রত মুখোপাধ্যায় (অধুনাপ্রয়াত), ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্রদের গ্রেফতার করা হয়েছিল! যে বেশি চিৎকার করছে সেই মামলায় তো তার নামও রয়েছে।’’

অভিষেক নাম করেননি বটে। তবে তাঁর নিশানা কার দিকে ছিল, তা কারওরই বুঝতে অসুবিধা হয়নি। সেই সঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘‘চোর-চোর বলে লাভ আছে? তোমাদের (বিজেপি) হাতে তো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা রয়েছে। প্রমাণ করে দেখাও না।’’

Advertisement

কেন্দ্রীয় অর্থ থেকে ‘বঞ্চিত’দের হাতে আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে তৃণমূল। তাঁদের চিঠিও লিখেছেন অভিষেক। সেই অর্থ ‘চুরির টাকা’ থেকে এসেছিল বলে অভিযোগ করেছিল বিরোধী বিজেপি। সোমবার তার জবাবে অভিষেক বলেন, ‘‘ওই অর্থ তৃণমূল সাংসদদের বেতন থেকে দেওয়া হয়েছে। ওটা তো বারত সরকারের টাকা! তা হলে ভারত সরকার কি চুরির টাকায় সাংসদদের বেতন দেয় বলে ধরে নিতে হবে?’’ তাঁর আরও চ্যালেঞ্জ, ‘‘ওদের (বিজেপি) হাতে তো ইডি-সিবিআই আছে। ওরা তদন্ত করে দেখুক না, ওই টাকা কোথা থেকে এসেছে।’’ কেন তিনি ওই অর্থ দিলেন, জানতে চাওয়ায় (বিরোধী বিজেপিও এই প্রশ্ন তুলেছে) অভিষেক বলেন, ‘‘কারণ, আমি কথা দিয়েছিলাম কেন্দ্রীয় সরকার টাকা না-দিলে আমি ওঁদের সাহায্য করব। সেইমতো আমি এবং আমার সহকর্মীরা মিলে নিজেদের বেতন থেকে টাকা দিয়ে ওঁদের সাহায্য করেছি। এতে অসুবিধা কোথায়?’’

প্রসঙ্গত, গত ২৯ নভেম্বর বিজেপির সভা ছিল ধর্মতলায়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ছিলেন প্রধান বক্তা। সেদিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল বিধায়কেরা কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে বিধানসভা চত্বরে অম্বেডকরের মূর্তির পাদদেশে কালো পোশাক পরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। তাঁরা নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের বিরুদ্ধে ‘চোর-চোর’ স্লোগান দিচ্ছেন শুনে বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে হাজির হন শুভেন্দু। উত্তেজনা তৈরি হয় বিধানসভা চত্বরে। প্রসঙ্গত, তার আগের দিনই শীতকালিন অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল বিরোধী দলনেতাকে। বুধবার বিধানসভায় পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে পাল্টা ‘চোর’ স্লোগান দিয়েছিলেন শুভেন্দুরা। সেই প্রেক্ষিতেই অভিষেকের ‘পকেটমার’ মন্তব্য। আর ওই একই বিষয়ে সোমবারেই তাঁর বিধানসভার বক্তৃতায় মমতা বলেন, ‘‘আমি নাকি ওদের কাছে চোর! আমি মানুষের কাছে ভোর হয়ে থাকব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন