Abhishek Banerjee on lok sabha vote

পাঁচ বছরে অনেক ফারাক, ২০১৮ সালের উদাহরণ টেনে ২০২৪ সালের জন্য হুঁশিয়ারি দিলেন অভিষেক

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে এক ধাক্কায় রাজ্যের ১২টি লোকসভা আসন হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল তৃণমূলের। অন্যদিকে, বিজেপির আসন দু’টি থেকে ১৬টি বেড়ে হয়েছিল ১৮।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৩ ২১:০৩
Share:

পঞ্চায়েত ভোটের মুখে জেলাস্তরের নেতাদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে যেন এমন কিছু না ঘটে, যার ‘বোঝা’ দলকে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বইতে হয়। সোমবার দলীয় বৈঠকে এমনই ‘হুঁশিয়ারি’ দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দলের নেতাদের জানিয়ে দিয়েছেন, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের জন্য ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের দলের খারাপ ফল হয়েছিল। কিন্তু ২০২৩ সালে ২০১৮ সালের পুনরাবৃত্তি করলে চলবে না। অর্থাৎ অভিষেক স্পষ্ট করে দলের নেতাদের বুঝিয়ে দিয়েছেন, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের কাঠামো বেঁধে ফেলতে হবে ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটেই। অভিষেক জানিয়ে দিয়েছেন, ২০১৮ আর ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে অনেক ফারাক৷ অনেক পার্থক্য থাকবে৷ নামে পঞ্চায়েত ভোট। কিন্তু ভোট হবে বিধায়ক-সাংসদ বাছাইয়ের মতো করে।

Advertisement

পঞ্চায়েত ভোটের মুখে সোমবার জেলা স্তরের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেছিলেন অভিষেক। তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীও ছিলেন তাঁর সঙ্গে। তৃণমূল সূত্রের খবর, বৈঠকে অভিষেকের কথায় ঘুরেফিরে এসেছে শান্তিপূর্ণ ভোটের কথা। কখনও তিনি বলেছেন, বিরোধীরা যেন অভিযোগ আনতে না পারেন যে, তাঁরা প্রার্থী দিতে পারেননি। আবার কখনও অভিষেককে বলতে শোনা গিয়েছে, শান্তিপূর্ণ ভোটের বন্দোবস্ত করতেই হবে। এমনকি, সম্প্রতি পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করা উত্তরবঙ্গের দুই প্রথম সারির নেতাকে নাম ধরে সতর্ক করতেও শোনা গিয়েছে অভিষেককে। তিনি বলেছেন, পঞ্চায়েত ভোটে কাউকে প্রার্থী দিতে দেব না— এ ধরনের কথাবার্তা একেবারেই বলা যাবে না। যদিও তাঁদের এক নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহ দাবি করেছেন, অভিষেক কখনও বলেনি যে, ‘বিতর্কিত’ কথা বলা যাবে না।

২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলির অন্যতম অভিযোগ ছিল, বহু কেন্দ্রে মনোনয়নই জমা দিতে পারেননি তাদের প্রার্থীরা। বিভিন্ন জেলায় বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত গঠনে গা-জোয়ারি করা হয়েছে। সোমবার অভিষেকের সাবধানবাণীতে স্পষ্ট, পাঁচ বছরের ব্যবধানে তিনি ২০২৩ সালে ২০১৮ সালের ‘পুনরাবৃত্তি’ চান না।

Advertisement

২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগের আবহেই ২০১৯ সালের লোকসভা ভোট এসে পড়ে। সেই ভোটে এক ধাক্কায় রাজ্যের ১২টি লোকসভা আসন হাতছাড়া হয়েছিল তৃণমূলের। অন্য দিকে, বিজেপির আসন ১৬টি বেড়ে হয়েছিল ১৮। ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে তৃণমূলকে থামতে হয়েছিল ২২-এ। লোকসভা ভোটে যে তৃণমূল ধাক্কা খেয়েছিল, তা দলীয় মহলে নিজেও স্বীকার করেছিলেন অভিষেক। তখন থেকেই ২০২৪ সালে লোকসভায় ভাল ফল করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছেন তিনি।

দলের একাংশের অবশ্য ব্যাখ্যা, বেশ কয়েকটি দুর্নীতি মামলায় এমনিতেই কিছুটা ‘চাপে’ রয়েছে তৃণমূল। তার উপর সাগরদিঘি উপনির্বাচনে সংখ্যালঘু ভোট হাতছাড়া হওয়ার উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। অনেকে বলছেন, সাগরদিঘিতে ‘প্রতিষ্ঠান বিরোধী’ ভোটও পড়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, এর উপর আর পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে অশান্তির ‘বাড়তি চাপ’ নিতে চাইছে না তৃণমূল। বিশেষত যেখানে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, ২০২৪ সালের লোকসভায় বিরোধী জোটকে নতুন করে গড়ে কেন্দ্রে বিরোধীদের ধাক্কা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন