কয়েক দিন ধরেই পুদুচেরির তাপমাত্রা কমবেশি ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বেলা বাড়তেই রাস্তাঘাট তাই প্রায় সুনসান। এর মধ্যে যদি দরজা-জানলা বন্ধ ঘরে দীর্ঘ ক্ষণ আটকে থাকতে হয়, তা হলে কেমন হবে অবস্থা!
বুধবার এমনই দুর্বিষহ অবস্থার শিকার হতে হয়েছে পুদুচেরি-হাওড়া এক্সপ্রেসের একটি বাতানুকূল কামরার যাত্রীদের। পশ্চিমবঙ্গেও দহন কিছু কম নয়। তার মধ্যে একই ধরনের বিভ্রাটে দুর্ভোগ পোহাতে হয় কামরূপ এক্সপ্রেসের যাত্রীদের। ওই ট্রেনেও এসি মেশিন গড়বড় করায় তাপদগ্ধ যাত্রীরা বিক্ষোভ দেখান।
অভিযোগ, পুদুচেরি-হাওড়া এক্সপ্রেসের এ-১ কামরার বাতানুকূল যন্ত্র খারাপ হয়ে যাওয়ায় প্রায় ৪০০ কিলোমিটার রাস্তা কার্যত দমবন্ধ করা পরিবেশে কাটাতে হয়েছে যাত্রীদের। বুধবার দুপুরে পুদুচেরি থেকে ট্রেনটি ছাড়ার পর থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত এই অবস্থা চলে। বিজয়ওয়াড়ায় ট্রেন পৌঁছনোর পরে বাতানুকূল কামরা জোড়া হয়। তার পরেই স্বস্তি মেলে। কিন্তু কেন এই ভোগান্তি, তা জানতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রেল।
যাত্রীরা জানান, পুদুচেরিতে ট্রেন ছাড়ার সময় থেকেই বাতানুকূল ব্যবস্থা ঠিকমতো কাজ করছিল না। ফলে কাচঢাকা কামরা ঠান্ডা হওয়ার বদলে গরম হতে থাকে। এক সময়ে ভিতরে আর বসা যাচ্ছিল না। টিকিট পরীক্ষককে ডেকে বারবার বলা সত্ত্বেও কাজ হয়নি। অসহায় যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ মোবাইল ফোন থেকে রেলের সাইটে গিয়ে অভিযোগ লিখে পাঠাতে থাকেন। শুক্রবার হাওড়ায় পৌঁছে স্টেশন ম্যানেজারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন যাত্রীরা।
রেলের বক্তব্য, ট্রেনটি পুদুচেরির থেকে ছাড়ার আগে ভেল্লুপুরমে মেরামত করা হয়েছিল। কিন্তু ওই কামরার বৈদ্যুতিন যন্ত্রে গোলমাল ছিল। তাই বাতানুকূল যন্ত্র চালু করা যায়নি। কেন এমন ঘটল? জবাব এড়িয়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘এই নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
রেলকর্তাদের একটি অংশের ব্যাখ্যা, রেক না-বাড়িয়ে এত দিন শুধু ট্রেন বাড়ানো হয়েছে। ফলে একটি রেকই মাইলের পর মাইল ছুটছে। মেরামতির সময়ই নেই। এই ধরনের বিপত্তি ঘটছে সেই কারণেই।
রেল সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বিকেলে হাওড়া থেকে ছাড়া কামরূপ এক্সপ্রেসের একটি কামরায় বাতানুকূল যন্ত্র কাজ করছিল না। যাত্রীরা চন্দননগর স্টেশন থেকে বিষয়টি রেলকর্মীদের নজরে আনেন। কিন্তু সুরাহা না-হওয়ায় ব্যান্ডেলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে মেরামতির পরে রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ ট্রেনটি ফের রওনা দেয়। যাত্রীরা জানান, মেরামতির পরেও বাতানুকূল যন্ত্র ঠিক ভাবে কাজ করেনি।