দাসপুরে ছাত্রীর মুখে অ্যাসিড

একটি অ্যাসিড হামলার ঘটনায় সম্প্রতি শাস্তির মেয়াদ পাঁচ থেকে বাড়িয়ে দশ বছর করে দিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। দোকানে অ্যাসিড বিক্রি নিয়ে কড়াকড়ি শুরু হয়েছে সারা দেশে। কিন্তু তারপরও অ্যাসিড হামলায় রাশ টানা যাচ্ছে না কিছুতেই। মঙ্গলবার ফের এক তরুণীর উপর অ্যাসিড হামলার অভিযোগ উঠল। এ বারের ঘটনাস্থল পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৬ ১০:০৯
Share:

একটি অ্যাসিড হামলার ঘটনায় সম্প্রতি শাস্তির মেয়াদ পাঁচ থেকে বাড়িয়ে দশ বছর করে দিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। দোকানে অ্যাসিড বিক্রি নিয়ে কড়াকড়ি শুরু হয়েছে সারা দেশে। কিন্তু তারপরও অ্যাসিড হামলায় রাশ টানা যাচ্ছে না কিছুতেই। মঙ্গলবার ফের এক তরুণীর উপর অ্যাসিড হামলার অভিযোগ উঠল। এ বারের ঘটনাস্থল পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দাসপুরের বছর একুশের ওই তরুণী পূর্ব মেদিনীপুরের একটি কলেজে বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলিতে দ্বিতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা চলছে এখন। ওই ছাত্রীর পরীক্ষাকেন্দ্র ঘাটালের একটি কলেজ। মঙ্গলবার সেখানেই সংস্কৃত পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন তিনি। দুপুর আড়াইটে নাগাদ পরীক্ষা শেষে ঘাটাল থেকে বাসে চেপে তিনি দাসপুর ফেরেন। তারপরই ঘটে অ্যাসিড হানা।

ওই তরুণী পুলিশকে জানিয়েছেন, দাসপুর বাসস্ট্যান্ডে নেমে সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ধূসর রঙের একটা মোটরবাইক পথ আটকায়। হেলমেট পরা এক যুবক মগে করে মুখে অ্যাসিড ছুড়ে দেয়। যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন ওই তরুণী। ততক্ষণে রাস্তায় ভিড় জমেছে। সেই সময় ওই রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তরুণীর কাকা। তিনি ভাইঝিকে বাড়ি নিয়ে আসেন। তারপর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন,চোখ দু’টো বেঁচে গিয়েছে। তবে মুখের এক পাশ এবং শরীরের ডান দিক ঝলসে গিয়েছে। ৬০ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় সন্ধ্যায় ওই তরুণীকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে।

Advertisement

কিন্তু কে, কেন এই কাণ্ড ঘটাল তা জানাতে পারেননি ওই তরুণী। তিনি শুধু পুলিশকে বলেছেন, হামলাকারীর মুখ হেলমেটে ঢাকা থাকায় তিনি চিনতে পারেননি। তবে মেয়েটির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর খানেক আগে ওই ছাত্রী ঘাটালের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কম্পিউটার শিখতে যেতেন। সেখানে বছর বাইশের এক যুবকের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই যুবক পেশায় সোনার কারিগর। মাস ছয়েক আগে সম্পর্ক ভেঙে যায়। তারপর থেকে তরুণীকে ফোনে ছেলেটি হুমকি দিত বলে অভিযোগ। এমনকী দিন পনেরো আগে ওই তরুণীর মুখে অ্যাসিড ছোড়ার হুমকিও দিয়েছিল সে।

ওই তরুণীর বাবা এ দিন বলেন, ‘‘ওই ছেলেটা আমার মেয়েকে খুব জ্বালাত। মেয়ে বললেও আমরা গুরুত্ব দিইনি। আগে বুঝলে এ রকম ক্ষতি হত না।’’ ওই ছেলেটির কথা দাসপুর থানার পুলিশকেও জানিয়েছে মেয়েটির পরিবার। পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগের ভিত্তিতে সন্ধান চলছে সন্দেহভাজন যুবকের।

খোলাবাজারে অ্যাসিড বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে দাসপুরে ঘরে ঘরে সোনার কাজ হয়। ফলে অ্যাসিড সেখানে সহজলভ্য। গত বছর মে মাসে দাসপুরের নন্দনপুরে এক ছাত্রীর উপর অ্যাসিড হামলা হয়েছিল। সেই ঘটনায় ধৃত রাধারমণ দিন্দাও ছিল পেশায় সোনার কারিগর। জেরায় সে জানিয়েছিল, সোনার কাজে ব্যবহৃত সালফিউরিক অ্যাসিড ছুড়েছিল সে। এ দিনের ঘটনায় সেই একই অ্যাসিড ব্যবহার হয়েছে কি না খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন