Marriage

মুখে সাতটি অস্ত্রোপচার, অ্যাসিড-দহনে দুয়ো দিয়ে মালাবদল সঞ্চয়িতা-শুভ্রর

মুখে অ্যাসিড-হামলা মানেই জীবনের শেষ নয়। তার পরেও ঘুরে দাঁড়ানো যায়। বেঁচে থাকা সম্ভব নিজের শর্তেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৯:০০
Share:

বিয়ের আসরে সঞ্চয়িতা ও শুভ্র। নিজস্ব চিত্র

দিনটা মা দেখে যেতে পারলেন না বলে চোখ ফেটে জল আসছিল সঞ্চয়িতা যাদবের। তবু অ্যাসিড-হানায় নষ্ট ডান চোখেও মোটা করে কাজল দিয়ে কনে সাজলেন যত্ন করেই। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের অরবিন্দ সঙ্ঘে বিয়ের আসর। লাল বেনারসিতে উজ্জ্বল সঞ্চয়িতা এবং তাঁর প্রেমিক থেকে বর শুভ্র দে-র চার হাত এক হল সেখানেই।

Advertisement

মুখে অ্যাসিড-হামলা মানেই জীবনের শেষ নয়। তার পরেও ঘুরে দাঁড়ানো যায়। বেঁচে থাকা সম্ভব নিজের শর্তেই। সদ্য সেই বার্তাই দিয়েছে দীপিকা পাড়ুকোনের ‘ছপাক’। সঞ্চয়িতার জীবনের চিত্রনাট্যও যেন সে-কথাই বলে গেল। তাঁর উপরে জোর খাটাতে ব্যর্থ হয়ে ২০১৪ সালে দমদমে সৌমেন সাহা নামে এক যুবক তাঁর মুখে অ্যাসিড মেরেছিল বলে অভিযোগ। চার বছর পরে সৌমেনকে ধরে পুলিশ। সে-দিন থানায় তাকে শনাক্ত করতে গিয়ে অভিযুক্তের গালে সপাটে চড় মারতে কসুর করেননি সঞ্চয়িতা। সেই মামলার বিচার শুরু হতে চলেছে। আর একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী সঞ্চয়িতা ইতিমধ্যে দাম্পত্য জীবন শুরু করতে চলেছেন।

মুখে সাতটি অস্ত্রোপচারের পরে সঞ্চয়িতা আর নতুন করে অস্ত্রোপচার করাতে চান না। যেমন আছেন, ঠিক সেই ভাবেই দুনিয়ার মুখোমুখি হতে চান তিনি। দমদমের শ্বশুরবাড়িতে শুভ্রর মা রিতা দে, বাবা প্রবীরকুমার দে-র কাছেও ভরসাস্থল নতুন বৌমা। মনের বাধা কাটিয়ে সঞ্চয়িতাকে তাঁরা নিজের মেয়ে করে নিয়েছেন। গত বছর মাতৃবিয়োগের পরে বাড়িতে একলা হয়ে পড়া সঞ্চয়িতার অভিভাবকপ্রতিম এখন তাঁর সহকর্মী, সমাজকর্মী অপরাজিতা গঙ্গোপাধ্যায়। ‘অপরাজিতাদির’ বাড়িতেই সকলে মিলে বাসর জাগা হল। কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পাশে দাঁড়িয়েছে। তারা ছাড়াও সঞ্চয়িতার ভরসা এখন এমনই কয়েক জন কাছের জন।

Advertisement

আরও পড়ুন: করোনা-আতঙ্কে চিনে ঘরবন্দি সুন্দরবনের ছাত্র

এ দিন সন্ধ্যায় ছিমছাম বিয়ের অনুষ্ঠান সেরে কয়েক জন নিমন্ত্রিত মিলে বিরিয়ানি-চাঁপ খাওয়া হল। এর আগে বোকারোর মেয়ে সোনালি মুখোপাধ্যায় বা দিল্লির লক্ষ্মী আগরওয়ালেরা অ্যাসিড-হামলার পরেও বিয়ে করেছেন, মা হয়েছেন। তেহট্টের মমতা সরকারের বিয়েও কিছু দিনের মধ্যে।

সঞ্চয়িতার সুহৃদদের আশঙ্কা ছিল, অভিযুক্তের ঘনিষ্ঠ কেউ বিয়েতে বাগড়া দিতে পারে। তবে সবই মিটেছে শান্তিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন