মনীষা পৈলান
একটুর জন্য সে বারবার ফস্কে যাচ্ছে বলে হাইকোর্টে কবুল করেছে পুলিশ। অথচ ফেসবুকে তার নড়াচড়া মালুম হচ্ছে বিলক্ষণ।
দু’বছর আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে এক তরুণীর মুখে অ্যাসিড হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত সেলিম হালদারকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ। অথচ অ্যাসিড হামলার শিকার সেই মেয়ে, মনীষা পৈলানকে নিয়মিত ফেসবুকের মেসেঞ্জারে সে উত্ত্যক্ত করে চলেছে বলে অভিযোগ। মনীষার দাবি, সেলিম এখনও ‘ভাল’র জন্য সব মিটমাট করে নিতে বলে হুমকি দিচ্ছে। গত ২৪ অগস্ট মনীষার জন্মদিনেও অভিযুক্ত যুবক তাঁকে ‘মেসেজ’ করে। ফেসবুকে প্রায়ই অনলাইন হলেও অভিযুক্তকে কেন ধরতে পারছে না পুলিশ? এই প্রশ্ন তুলে আপাতত আইনজীবীর দ্বারস্থ হয়েছেন ওই তরুণী। মনীষার ধারণা, নানা ভাবে তাঁর উপরে চাপ সৃষ্টি করে অভিযোগ থেকে রেহাই পাওয়াই লক্ষ্য সেলিমের। সেই লক্ষ্যেই চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায় উত্ত্যক্ত করা।
আরও পড়ুন: বাইকে চেপেই ট্রেন ধরতে আসবেন কি
হাইকোর্টের উকিল জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘রাজ্য পুলিশের ডিজি মনীষার ব্যাপারে তদন্তের রিপোর্ট দিয়েছিলেন হাইকোর্টে, এক বছর আগে। এত দিন ধরে পুলিশ কী করল, সেটাই প্রশ্ন।’’ বারুইপুরের এসডিপিও অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবশ্য আক্ষেপ, ‘‘বেশ কয়েকবার সেলিম হাতে এসেও ফস্কে গিয়েছে।’’
তবে রাজ্যে অ্যাসিড হামলার তদন্তের সামগ্রিক ছবির নিরিখে এই পরিস্থিতি ব্যতিক্রম নয়। ২০১৩-র জাতীয় ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো-র হিসেব, গোটা দেশে অ্যাসিড হামলার ৪০% ঘটনায় বিচার মেলে, পশ্চিমবঙ্গে এই হার মাত্র ১৪.৪%। পুলিশের দাবি, অনেক ক্ষেত্রে অ্যাসিড হামলার শিকার মেয়েদের চোখ নষ্ট হয়ে যায় বলেও হামলাকারীদের বিষয়ে তথ্যপ্রমাণ থাকে না। তবে মনীষার একটি চোখে দৃষ্টি আছে। তিনি ছাড়াও একজন প্রত্যক্ষদর্শী রয়েছেন হামলার। সেলিম দীর্ঘদিন ধরে মনীষাকে বিরক্ত করছিল বলে পুলিশও তদন্তে জেনেছে। এই হামলায় সেলিমের সহ-অভিযু্ক্তরা অনেকে মনীষার পড়শি। তারাও এখন জামিনে। ফলে, নিরাপত্তার অভাববোধ তৈরি হচ্ছে মনীষার। তাঁর কথায়, ‘‘সুবিচারের জন্য জানি না আরও কত দিন অপেক্ষা করতে হবে।’’