Flash Flood in Sikkim

তিস্তাপারে যত্রতত্র সেনার শেল

তিস্তার জলে ভেসে আসা কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে এলাকার বাসিন্দারা নদী থেকে সেই সব মর্টার শেল, দূরবিন, সেনা-ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম বাড়িতে নিয়ে যান বলে দাবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:০৩
Share:

তিস্তা নদীতে ভেসে আসা সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক উদ্ধার করে ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ এবং সেনাবাহিনী জওয়ানরা মোট আটটি বিস্ফোরক নদী চড়ে ফাটিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।

জলপাইগুড়িতে তিস্তা নদীর পার জুড়ে একাধিক লোকালয়ে কোথাও পড়ে আছে সেনাবাহিনীর মর্টার শেল, কোথাও বিভিন্ন ধরনের ‘বিস্ফোরক’। কোথাও সেগুলো গাছের ডাল-পাতা দিয়ে কেউ ঢেকে রেখেছে, অনেকে আবার রাস্তার ধারে এনেও ফেলে রেখেছে। পুলিশকে জানানোর পরেও সে সব ‘অস্ত্রশস্ত্র’ সরানো হচ্ছে না বলে অভিযোগ গ্রামবাসীর। গত বৃহস্পতিবার এ রকমই একটি ‘বিস্ফোরক’ উদ্ধারের পরে তা খোলার চেষ্টা করতে গিয়ে দুর্ঘটনার জেরে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে ক্রান্তিতে। তার পরেও এ ভাবে সেগুলো যত্রতত্র পড়ে থাকায় আতঙ্কে তিস্তাপারের বাসিন্দারা। যদিও পুলিশের দাবি, সেনা ও বম্ব স্কোয়াড ছাড়া সেনার কাজে ব্যবহৃত ওই সব ‘বিস্ফোরক’ সরানো বা নিষ্ক্রিয় করা সম্ভব নয় তাদের পক্ষে। সেনার সঙ্গে যোগাযোগ করে বিস্ফোরক সরানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে জেলা পুলিশ জানিয়েছে এ দিন।

Advertisement

সিকিমে বিপর্যয়ের জেরে তিস্তা নদীর তীব্র স্রোতে ভেসে আসে সেনার ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী, অস্ত্র ও বিস্ফোরক। তিস্তার জলে ভেসে আসা কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে এলাকার বাসিন্দারা নদী থেকে সেই সব মর্টার শেল, দূরবিন, সেনা-ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম বাড়িতে নিয়ে যান বলে দাবি। এর পরেই শেল ফেটে মৃত্যুর জেরে প্রশাসনের টনক নড়ে। শুরু হয় সচেতনতা প্রচার ও মাইকিং। এর পরেও, তিস্তা সংলগ্ন বিবেকানন্দপল্লি, দক্ষিণ বালাপাড়া, মণ্ডলঘাট ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য ‘বিস্ফোরক’ ও শেল পড়ে থাকতে দেখা যায়। গ্রামবাসীদের দাবি, প্রথমে অনেকেই অত্যুৎসাহের বশে নদীর চর থেকে ওই সব শেল ও ‘বিস্ফোরক’ বাড়িতে নিয়ে আসেন। কিন্তু দুর্ঘটনার পরে প্রশাসন সক্রিয় হতেই সেগুলো রাস্তায় জঙ্গলে ও পুকুরে ফেলে দিয়েছেন সকলে। তবে থানায় জানানোর পরেও সেগুলো নিষ্ক্রিয় করা বা তুলে নিয়ে হচ্ছে না বলে অভিযোগ।

স্থানীয় এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, যে কোনও সময় আবার দুর্ঘটনা
ঘটে যেতে পারে। আতঙ্কে গ্রামবাসী। জেলা পুলিশ সুপার উমেশ
খান্ডবহালে বলেন, ‘‘সেনার ক্যাম্পের সামগ্রী কোথায় কী রয়েছে সবটাই চিহ্নিত করা হচ্ছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। গ্রামবাসীদের সচেতন করা হচ্ছে। সেনার সঙ্গে যোগাযোগ
করা হচ্ছে।’’

Advertisement

এ দিনও জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ তিস্তায় ভেসে আসা ৮টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। এখনও পর্যন্ত জেলায় মোট ৪০ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জেলা পুলিশ সুপার উমেশ খান্ডবহালে জানিয়েছেন। রবিবার বিকেল পর্যন্ত ৩৮ জনের দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘১০ জনের দেহ শনাক্ত করতে পেরেছেন পরিবারের লোকেরা। শনাক্তকরণের পরে পরিবারের লোকেদের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৬ জন সেনা জওয়ান এবং ৪ জন সাধারণ
নাগরিক রয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন