৪ মাসে ফুরোয় না সব, কর্মীদের বার্তা অধীরের

লাগাতার ভাঙনে বিপর্যস্ত কংগ্রেস কর্মীদের হতাশা কাটিয়ে মাঠে নামার ডাক দিলেন অধীর চৌধুরী। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দাবি, দল ছেড়ে যাচ্ছেন কিছু নেতা এবং বিধায়ক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:০৭
Share:

দলীয় অনুষ্ঠানে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। রবিবার উত্তম মঞ্চে। — নিজস্ব চিত্র

লাগাতার ভাঙনে বিপর্যস্ত কংগ্রেস কর্মীদের হতাশা কাটিয়ে মাঠে নামার ডাক দিলেন অধীর চৌধুরী। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দাবি, দল ছেড়ে যাচ্ছেন কিছু নেতা এবং বিধায়ক। যাঁরা চার মাস আগেও কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছেন, তাঁরা কেউ হাত ছে়ড়ে যাননি। মানুষের কাছে তাই কংগ্রেসকে প্রাসঙ্গিক রাখতে পাড়ায় পাড়ায় দলের কর্মীদের সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

দক্ষিণ কলকাতার উত্তম মঞ্চে রবিবার দলীয় এক অনুষ্ঠানে অধীরবাবু বলেন, ‘‘চার মাস আগেই বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ৪৪টা আসন পেয়েছে। কী এমন ঘটল যে, চার মাসে সব শেষ হয়ে গেল! তৃণমূলই বা কী এমন ক্যারিশমা করল যে, সবাই তৃণমূল হয়ে গেল! আসলে চলে যাচ্ছেন কিছু নেতা। কিন্তু মানুষ সঙ্গে আছেন।’’ প্রদেশ সভাপতির অভিযোগ, পুলিশ-প্রশাসন থেকে বাহুবলী, টাকা থেকে মামলার ভয়— সবই কাজে লাগানো হচ্ছে দল ভাঙানোর জন্য। কাউন্সিলর বা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের আত্মীয়-পরিজনের বাড়ির জলের লাইন কেটে দেওয়া বা মাদক পাচারের মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হচ্ছে। সাধারণ জনপ্রতিনিধিদের পক্ষে এমন চাপের মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আর বিরোধী দলের পক্ষে এ জিনিস ঠেকানোও কঠিন। তবে অধীরবাবু মেনে নিয়েছেন, দলের নেতা-বিধায়কদের একাংশ প্রলোভনেও পা দিচ্ছেন। তাই বলেছেন, আগে যদি জানতেন ভোটের পরে এমন ঘটনা ঘটবে, তা হলে প্রার্থী বাছাই করার সময়ে আরও সতর্ক থাকতেন।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দাওয়াই, ‘‘পাড়ায় পাড়ায় মাইক বাজিয়ে কংগ্রেসের হয়ে প্রচার শুরু করুন। মানুষের কাছে যান। প্রথম দিন কেউ আসবে না। পরের দিন একটা লোক আসবে। আপনারা রাস্তায় থাকলে আস্তে আস্তে মানুষও আসবেন।’’ একই সুরে প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি তথা সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যও বলেছেন, ‘‘নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের একটা অংশ চলে যাচ্ছে পদ ও ক্ষমতার লোভে। কিন্তু মানুষ চলে যায়নি। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে চলার কাজ আমাদের করতে হবে।’’ প্রসঙ্গত, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দল ছেড়ে যাওয়া আটকাতে দলত্যাগ-বিরোধী আইন আরও শক্তিশালী করার আর্জি জানিয়ে মামলার পথে যেতে চাইছে কংগ্রেস। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান দিল্লি গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের কাছেও দরবার করা হবে।

Advertisement

অধীরবাবুর নিজের জেলা মুর্শিদাবাদে জেলা পরিষদ থেকে বরহমপুর পুরসভা, সবই দখল করে নিয়েছে তৃণমূল। ওই জেলার ক্ষেত্রে প্রদেশ সভাপতির অভিযোগ, গরু পাচারের টাকার ভাগ শাসক দলের যুব সভাপতি এবং তৃণমূলের দলীয় তহবিলে যাচ্ছে। সেই টাকা দল ভাঙাতেও কাজে লাগছে। অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের এক প্রথম সারির নেতা অবশ্য বলেছেন, ‘‘দলের অস্তিত্ব বিপন্ন। নিজের গড় ভেঙে পড়েছে। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে অধীরবাবু এখন ভুল বকছেন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন