Sunderbans

দ্বীপ-দূষণ রুখতে প্লাস্টিক বোতল জমা দিলে ইনাম

সেই দূষণ-দুর্গতি থেকে সুন্দরবনকে বাঁচাতে স্থায়ী বোতল বিলির এই ব্যবস্থা।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২১ ০৬:২৫
Share:

ফাইল চিত্র।

তৃষ্ণা মেটানোর জলের প্লাস্টিক বোতল থেকেও দূষণের আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড়-বিধ্বস্ত সুন্দরবনে। তার মোকাবিলায় দশটি ব্যবহৃত প্লাস্টিকের বোতল দিলেই জল রাখার জন্য উন্নত মানের একটি বোতল দিচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

Advertisement

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবের পরে সুন্দরবন অঞ্চলে অন্যতম ত্রাণসামগ্রী হিসেবে পানীয় জল দেওয়া হচ্ছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসন বিভিন্ন এলাকায় ট্যাঙ্কে জল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। অভিযোগ, তা পর্যাপ্ত নয়। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও সাহায্যকারী বিভিন্ন সংগঠন খাবার ও ত্রিপলের সঙ্গে সঙ্গে ছোট ছোট প্লাস্টিকের বোতলে জল বিতরণ করছে। আর সেই জলেরই হাজার হাজার প্লাস্টিক বোতল ছড়িয়ে পড়েছে দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনাভুক্ত সুন্দরবনের ২৯টি ব্লকের বিভিন্ন এলাকায়। দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। সেই দূষণ-দুর্গতি থেকে সুন্দরবনকে বাঁচাতে স্থায়ী বোতল বিলির এই ব্যবস্থা।

এক বা দু’লিটারের বোতল তো আছেই, পাঁচ-দশ লিটারের লক্ষ লক্ষ প্লাস্টিকের বোতলে সুন্দরবনের বিভিন্ন দ্বীপে জল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের কাছে খবর এসেছে। জলপানের পরে খালি প্লাস্টিকের সেই সব বোতল নিয়ে আতান্তরে পড়েছে জেলা প্রশাসন। এক দিকে পানীয় জলের হাহাকার, অন্য দিকে পানীয় জলের খালি বোতল জমা হওয়া নিয়ে আদালতের রোষানলে পড়ার আশঙ্কা। অভিযোগ, শুধু গোসাবা ব্লকের কুমিরমারি পঞ্চায়েত এলাকাতেই জমা হয়েছে ১০ হাজার বোতল! সেখানেই শনিবার, বিশ্ব পরিবেশ দিবসে বারুইপুরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যেরা উন্নত মানের বোতলের বিনিময়ে খালি প্লাস্টিক বোতল সংগ্রহের কাজ শুরু করেন।

Advertisement

শনিবার ও রবিবার গোসাবার কুমিরমারি এলাকা এবং আশপাশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রায় ২০ হাজার খালি বোতল সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান বারুইপুরের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার প্রসেনজিৎ মিস্ত্রি।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তার বক্তব্য, বর্তমান পরিস্থিতিতে পানীয় জল বিতরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, সরকারের তরফে পর্যাপ্ত জল সরবরাহ করা যাচ্ছে না। বিভিন্ন বিচ্ছিন্ন
দ্বীপে পানীয় জল সরবরাহে নানান সমস্যাও আছে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির তরফে ওই সব দ্বীপে ছোট ছোট বোতলে পানীয় জল সরবরাহ করা হচ্ছে। দ্বীপে প্লাস্টিকের বোতল জমতে থাকলে সুন্দরবনের পরিবেশের উপরে তার মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদেরাও। ‘‘অবিলম্বে ওই সব খালি বোতল উদ্ধারের উদ্যোগ দরকার। নইলে এক দিকে জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হবে। অন্য দিকে পরিবেশ নষ্টের আশঙ্কা আছে,’’ বলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ‘‘প্রশাসন, পঞ্চায়েত ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে খালি প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহের পরিকল্পনা করেছি। চলতি সপ্তাহেই সুন্দরবনের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের কাছ থেকে খালি বোতল সংগ্রহ করার কাজ শুরু হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন