Dearness Allowance

কবে পাব? কত পাব? সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলায় নির্দেশের পর নবান্ন থেকে নব মহাকরণে আলোচনায় মশগুল কর্মীমহল

রাজ্য সরকারকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ছ’সপ্তাহের মধ্যে বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এমন নির্দেশের পর সরকারি কর্মচারী মহলে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। নবান্ন থেকে নব মহাকরণ, বিধানসভা থেকে খাদ্যভবন— সর্বত্রই কর্মীমহলে আলোচনা, কবে পাব? কত পাব?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২৫ ১৩:০১
Share:

ডিএ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর আলোচনা শুরু হয়েছে সরকারি কর্মচারী মহলে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

গত ১৬ মে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘভাতার (ডিএ) ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকারকে। নির্দেশে বলা হয়েছে, শীর্ষ আদালতের নির্দেশ জারির ছ’ সপ্তাহের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে ওই পরিমাণ বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের ওই নির্দেশের পর সরকারি কর্মচারীমহলে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। নবান্ন থেকে নব মহাকরণ, বিধানসভা থেকে খাদ্যভবন— সর্বত্রই কর্মীমহলে আলোচনা, কবে পাব? কত পাব?

Advertisement

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি সন্দীপ মেটার ডিভিশন বেঞ্চ যে রায় দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে জারি হওয়া ‘রিভিশন অফ পে অ্যান্ড অ্যালাউন্স’ (রোপা) অনুযায়ী বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ পাবেন পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীরা।

২০০৯ সালে পঞ্চম বেতন কমিশনের অধীনে জারি হওয়া রোপার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৯ সালে। তাই ২০১৯ সালের পরে পশ্চিমবঙ্গে সরকারি চাকরি পাওয়া কোনও কর্মচারী ওই ২৫ শতাংশ ডিএ পাবেন না। যাঁরা ২০০৯ সাল থেকে বা তার আগে সরকারি কর্মচারী পদে কর্মরত রয়েছেন বা কর্মরত ছিলেন, তাঁরাই ওই ১০ বছরের সময়কালে বকেয়া থাকা ডিএ-র সুবিধা পাবেন। ২০০৯ সালের পরবর্তী ১০ বছরে নিযুক্ত সরকারি কর্মচারীরাও সময়কালের ভিত্তিতে ওই বকেয়া ডিএ-র সুবিধা পাবেন। তবে এ ক্ষেত্রে সব কর্মচারীর ডিএ পাওয়ার পরিমাণ এক হবে না। তাই সরকারি কর্মচারীমহলে কে কত ডিএ পাবেন, তা নিয়ে হিসাব কষা শুরু হয়েছে। মোবাইল ফোনের ক্যালকুলেটরে ঘন ঘন হিসেব কষে নিজেদের ডিএ-র পরিমাণ যাচাই করে সেই সাপেক্ষে আলোচনা করছেন সরকারি কর্মচারীরা। সেই হিসাব-নিকাশে উঠে আসছে যে তথ্য, তা বলছে, কোনও কোনও আধিকারিক লক্ষাধিক টাকা বকেয়া ডিএ পাবেন। আবার ২০১৫-’১৮ সালে সরকারি চাকরি পাওয়া কর্মচারীরা কয়েক হাজার টাকা ডিএ পাবেন। ডিএ মামলার পরবর্তী শুনানি অগস্ট মাসে। তখন সুপ্রিম কোর্ট আবার কী নির্দেশ দেয়, সে দিকেও নজর রয়েছে সরকারি কর্মচারীদের।

Advertisement

কো অর্ডিনেশন কমিটির নেতা বিশ্বজিৎ গুপ্ত চৌধুরী অবশ্য কর্মীদের এমন আলোচনায় মশগুল থাকায় কোনও অস্বাভাবিকতা দেখছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে এমন উৎসাহ থাকাটাই স্বাভাবিক। দীর্ঘ দিনের লড়াইয়ের কারণেই সুপ্রিম কোর্ট থেকে এমন নির্দেশ এসেছে। অল ইন্ডিয়া কনজ়িউমার প্রাইস ইনডেক্সের ভিত্তিতেই রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা মহার্ঘভাতা পাবেন। সেটা তাঁদের অধিকার। ২০১৯ সালের পরে যাঁরা সরকারি কাজে যোগদান করেছেন, তাঁরাও এখন ৩৭ শতাংশ ডিএ থেকে বঞ্চিত। ফলে বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ পেয়ে গেলেও আমাদের লড়াই থেমে থাকবে না। সরকারি কর্মীমহলে আলোচনা তো স্বাভাবিক।’’

বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল বলছেন, ‘‘অনেক দিন পরে কোনও অভুক্ত মানুষ অনেক খাবার একসঙ্গে পেয়ে গেলে কোনটা আগে খাবেন আর কোনটা পরে, তা নিয়ে নিজে নিজেই ভাবতে শুরু করেন। এখানেও তেমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অনেক দিন বকেয়া ডিএ না পাওয়ার পরে যখন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সেই বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ পাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতেই সরকারি অফিসগুলোতে আলোচনা শুরু হয়েছে। সকলেই জানতে চাইছেন তাঁরা কত পাবেন আর কবে পাবেন।’’

তৃণমূল সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বায়ক প্রতাপ নায়েকের কথায়, ‘‘আমাদের সংগঠনের অধীন সরকারি কর্মচারিবৃন্দ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর আস্থাশীল। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে যখন ডিএ দেওয়ার ঘোষণা হয়েছে, তখন মুখ্যমন্ত্রী যথাসময়ে সেই রায় কার্যকর করবেন বলেই আমাদের বিশ্বাস। এ নিয়ে আমাদের পৃথক কোনও বক্তব্য নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement