দুর্ঘটনা থামছে না বিধাননগরে। ফের বৃহস্পতিবার ভোরে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির। ঘটনাটি ঘটেছে সল্টলেকের ৫ নম্বর সেক্টরে নবদিগন্ত উড়ালপুলের কাছে। ঘাতক গাড়িটিকে অবশ্য শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ জানায়, রাস্তা পার হওয়ার সময়ে ই এম বাইপাস থেকে রাজারহাটমুখী লেনে তীব্র গতিতে একটি গাড়ি এসে ধাক্কা মারে বছর পঞ্চাশের ওই ব্যক্তিকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
গত কয়েক মাস ধরে লাগাতার দুর্ঘটনা ঘটছে বিধাননগর কমিশনারেটের বিভিন্ন এলাকায়। এ নিয়ে চিন্তায় পুলিশ কর্তারাও। কী ভাবে তা আটকানো যায়, তা নিয়ে চলছে বিস্তর আলোচনা, তৈরি হয়েছে পরিকল্পনাও। কিন্তু এখনও তা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। যেমন, কমিশনারেট এলাকার গুরুত্বপূর্ণ মোড়-সহ প্রায় ২৫০টি জায়গায় সিসি ক্যামেরা বসানোর কথা হলেও তা শেষ হয়নি। ফলে বহু ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার খবর পুলিশের কাছে সময়ে পৌঁছয় না, মুশকিল হয় গাড়িগুলিকে চিহ্নিত করতেও।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, দুর্ঘটনার পরে ঘাতক গাড়িকে দ্রুত চিহ্নিত করে ধরার ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে পুলিশও। যেমন, সেপ্টেম্বরে সিটি সেন্টার মোড়ে বাস-অটো সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছিল দুই ব্যক্তির। বাসের নম্বরও পেলেও সেটিকে আটক করতে রীতিমতো হিমসিম খেয়ে যায় পুলিশ। ওই দিনই পরে বাসটি মেলে একটি গ্যারাজে। পরে ধরা পড়ে চালক।
বৃহস্পতিবারের দুর্ঘটনায় গাড়িটিকে চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ। কারণ, নবদিগন্ত উড়ালপুল এলাকায় পর্যাপ্ত সিসিক্যামেরা নেই। আর উইপ্রো মোড়ের পরে সাধারণত ট্রাফিক পুলিশের নজরদারি থাকে না বলেই অভিযোগ।
বাসিন্দাদের প্রশ্ন, শুধু দুর্ঘটনা নয়, নজরদারি না থাকলে যে কোনও সময়ে নাশকতামূলক ঘটনাও ঘটতে পারে। যেমন, নবদিগন্ত উড়ালপুল থেকে টেকনোপলিস মোড়ের দিকে যেতে সেনা আবাসনের কাছে এক যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে বিস্ফোরণের মতো আওয়াজ হয়েছিল। দেখা যায়, প্রতীক্ষালয় কিছুটা পুড়ে গিয়েছে। তখনও চিহ্নিত করা যায়নি কাউকে। অভিযোগ, পুলিশ যে পরিকল্পনার কথা বলছে, তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।
পুলিশকর্তারা অবশ্য বলছেন, পরিকাঠামো সংস্কার নিয়ে পরিকল্পনা হয়েছে। ধাপে ধাপে তা কার্যকর করা হবে। বিধাননগর পুলিশের ডিসি (সদর) নিশাদ পারভেজ বলেন, ‘‘কিছু দিনের মধ্যেই ১০০টি সিসি ক্যামেরার নজরদারি শুরু হয়ে যাবে। আরও বৃহদাকারে পরিকল্পনা চলছে।’’ তিনি জানান, দুর্ঘটনা রোধে পথচারীদের হাঁটার রাস্তা নির্ধারণ করা, কাট আউট বন্ধ করা-সহ একাধিক পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’