‘কাটমানি’ কাণ্ড, মমতার কড়া অবস্থানেও থামছে না বিক্ষোভ

ঘটনা যাই হোক, গ্রাম ছাড়িয়ে ক্ষোভের আঁচ পড়তে শুরু করেছে শহরেও। বাদ পড়েনি তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নিজের শহর বোলপুরও!

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৯ ০৩:৩৮
Share:

—ফাইল চিত্র।

‘কাটমানি’ নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ উঠলে দলের নেতাদেরও যে রেয়াত করা হবে না, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। তার মধ্যেই জেলায় জেলায় শাসকদলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ‘কাটমানি’ খাওয়ার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে দাঁড়ি পড়ছে না। উত্তর থেকে দক্ষিণ—সর্বত্রই সংক্রামক রোগের মতো ছড়িয়ে পড়ছে এই বিক্ষোভ। তবে অনেক ক্ষেত্রেই এই বিক্ষোভের পিছনে বিজেপি এবং সিপিএমের ইন্ধন থাকার অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

Advertisement

ঘটনা যাই হোক, গ্রাম ছাড়িয়ে ক্ষোভের আঁচ পড়তে শুরু করেছে শহরেও। বাদ পড়েনি তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নিজের শহর বোলপুরও! বৃহস্পতিবার রাতে বিক্ষুব্ধ জনতা ঘেরাও করে বোলপুরের উপ-পুরপ্রধান তথা দুবরাজপুরের বিধায়ক নরেশ বাউড়ির কার্যালয়। তাঁদের অভিযোগ, সরকারি প্রকল্পে বাড়ি নির্মাণ করতে নেওয়া টাকা ফেরত দিতে হবে। শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করে বোলপুরের পুরপ্রধান সুশান্ত ভকত দাবি করেন, টাকা নেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। নরেশবাবু বলেন, ‘‘সিপিএম-বিজেপি উস্কানি দিয়ে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে।’’ বিজেপি অভিযোগ মানতে চায়নি।

বীরভূম সদর সিউড়ি শহরেও ‘কাটমানি’র অভিযোগ তুলে শুক্রবার বিকেলে এক তৃণমূল কাউন্সিলরের বাড়ি ঘেরাও করেন উপভোক্তাদের একাংশ। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। সাঁইথিয়ার ভ্রমরকোল গ্রামে এ দিনই সন্ধ্যায় ‘কাটমানি’ ফেরতের দাবিতে পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান, তৃণমূলের যুব নেতা এবং এক কর্মীর বাড়িতে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা।

Advertisement

একই ছবি বালুরঘাট শহরে। চাকরির নামে দেওয়া টাকা ফেরতের দাবি তুলে শুক্রবার দুপুরে শহরের বেলতলা পার্ক এলাকায় তৃণমূলের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের সদস্য বিশ্বনাথ পাহানের বাড়িতে হামলা চালায় ১০-১২ জনের একটি দল। বিশ্বনাথ সে সময়ে বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর স্ত্রী মিনতিদেবী একাই ছিলেন। তিনি জানান, বিক্ষোভকারীদের মুখে কাপড় বাঁধা ছিল এবং হাতে আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল। তারা ইট মেরে বাড়ির

কাচ ভেঙে দেয়। পুলিশ যাওয়ার আগেই ওই দলটি মোটরবাইকে পালিয়ে যায়। ঘটনাকে ঘিরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেরও অভিযোগ উঠেছে।

গ্রাম সংসদ সভায় ‘কাটমানি’র অভিযোগে সরব হয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পশ্চিম মেদিনীপুরের ভেটিয়া পঞ্চায়েতের প্রধান ও খড়্গপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির এক মহিলা কর্মাধ্যক্ষকে ঘেরাও করেন গ্রামবাসীরা। তৃণমূলের দাবি, বিজেপিই পরিকল্পনা করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। বিজেপি-র দাবি, বাজ পড়ে মৃত দুই যুবকের পরিবারকে সরকারি সাহায্য পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ৫৫ হাজার

টাকা নেওয়া হয়েছিল। সেই টাকাই চাইছেন পরিবারের লোকজন। তোলা নেওয়ায় অভিযুক্ত কয়েক জনের নাম লেখা চিরকুট পেয়েছেন গড়বেতার তৃণমূল বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী।

বৃহস্পতিবার রাত থেকে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের দিগনগর গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ের আশপাশে এবং রাস্তার ধারে একাধিক জায়গায় পোস্টার দেয় বিজেপি। পোস্টারগুলিতে ‘কাটমানি’ খেয়ে নিম্নমানের ঢালাই রাস্তা তৈরি, সরকারি আবাসন প্রাপকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া, সময়ে একশো দিনের কাজের মজুরি না দেওয়া, গরিব মানুষকে বিলি করার জন্য গম না পাওয়া-সহ একাধিক অভিযোগ তোলা হয়েছে।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন