প্রতীকী ছবি।
পরীক্ষামূলক ভাবে কৃত্রিম উপায়ে সামুদ্রিক মাছের চাষে তারা সফল হয়েছে বলে রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের দাবি। তাই এ বার বাণিজ্যিক ভাবে সামুদ্রিক মাছ চাষে নামছে তারা। লক্ষ্য: অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু ও কেরলের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া।
কৃত্রিম উপায়ে সামুদ্রিক মাছ চাষে সাফল্যকে পুঁজি করেই সামুদ্রিক মাছের দেশি-বিদেশি বাজার ধরতে ঝাঁপাচ্ছে রাজ্য। এখন এই বাজারের বেশির ভাগটাই দখল করে রেখেছে মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, তামিলনাড়ু আর অন্ধ্রপ্রদেশ। পশ্চিমবঙ্গের লক্ষ্য, কমপক্ষে ৫০ শতাংশ উৎপাদন বাড়িয়ে প্রথম তিনে পৌঁছে যাওয়া।
বঙ্গোপসাগরের সিলভার পমপ্যানো, ফিলিপিন্সের চ্যানোস আর ইউরোপীয় মাছ কোবিয়া-রই কদর বেশি। গত চার বছর ধরে পূর্ব মেদিনীপুরের আলমপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফ্রেজারগঞ্জ ও হেনরি আইল্যান্ডে পরীক্ষামূলক ভাবে এই তিন ধরনের সামুদ্রিক মাছের চাষ করে সাফল্য পেয়েছে নিগম। পমফ্রেট গোত্রের মাছ সিলভার পমপ্যানো। ২০১৪-য় তামিলনাড়ুর মান্দাপম থেকে ওই মাছের ১০ হাজার চারা এনে ছাড়া হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরের আলমপুরে। কলকাতার বিভিন্ন বাজারে প্রায় ১০ লক্ষ সিলভার পমপ্যানো বিক্রি হয়েছিল। গত জুলাইয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার হেনরি আইল্যান্ড ও ফ্রেজারগঞ্জে নিগমের জলাশয়ে ১২ হাজার চ্যানোস (মিল্কফিশ) মাছের চারা ছাড়া হয়েছিল। নিগম সূত্রের খবর, চলতি বছরে প্রায় ১৭ লক্ষ টাকার চ্যানোস মাছ বিক্রি করা হয়েছে। মাস তিনেক আগে হেনরি আইল্যান্ডে নিগমের জলাশয়ে কোবিয়া মাছের ৭০০ চারা ছাড়া হয়েছে। এখন তাদের গড় ওজন দাঁড়িয়েছে প্রায় দুই কিলোগ্রাম। সম্প্রতি দিল্লির বিশ্ব খাদ্য উৎসবে কোবিয়া মাছ নিয়ে গিয়ে বিপুল সাড়া পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছেন রাজ্যের মৎস্য কর্তারা।
মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের কথায়, ‘‘সামুদ্রিক মাছ চাষ শুরুর পরে সেই সব মাছ কেনার জন্য বিভিন্ন রফতানিকারী সংস্থা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। ওই মাছ বেচে ভালই লাভ হয়েছে। তাই এ বার এই মাছ চাষে আরও জোর দিতে চাইছি।’’
মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু ও কেরলে অনেক আগে থেকেই সমুদ্রের মধ্যে খাঁচায় সামুদ্রিক মাছের চাষ (‘কেজ কালচার’) হচ্ছে। পুকুরে কৃত্রিম ভাবে সিলভার পমপ্যানোর চাষ শুরু হয়েছে একমাত্র অন্ধ্রপ্রদেশেই। রাজ্যে সব ধরনের সামুদ্রিক মাছই পুকুরে কৃত্রিম ভাবে চাষ করা হয়েছে বলে দাবি নিগমের। নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌম্যজিৎ দাস জানান, বাণিজ্যিক ভাবে সামুদ্রিক মাছের চাষ করতে হলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আধিকারিকের সংখ্যা বাড়াতেই হবে। তাই পাঁচ জন নিগম আধিকারিককে এই প্রথম তামিলনাড়ুর মান্দাপমে সেন্ট্রাল মেরিন ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউট -এ প্রশিক্ষণে পাঠানো হয়েছে।