অযোধ্যা পাহাড়ে বিদ্যুৎ প্রকল্পে মিলল অনুমোদন

অনেক টানাপড়েনের পরে অবশেষে পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে ১০০০ মেগাওয়াটের তুর্গা পাম্প স্টোরেজ বিদ্যুৎ প্রকল্পের অনুমোদন দিল সেন্ট্রাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটি (সিইএ)।

Advertisement

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:১৪
Share:

অনেক টানাপড়েনের পরে অবশেষে পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে ১০০০ মেগাওয়াটের তুর্গা পাম্প স্টোরেজ বিদ্যুৎ প্রকল্পের অনুমোদন দিল সেন্ট্রাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটি (সিইএ)। ইতিমধ্যেই সেই ছাড়পত্রের চিঠি এসে পৌঁছেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কাছে। এখন প্রয়োজন শুধু বন মন্ত্রকের ছাড়পত্র।

Advertisement

অযোধ্যা পাহাড়ের গায়ে তুর্গা নালার জল ব্যবহার করে নতুন একটি পাম্প বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলা যে সম্ভব, সিইএ নিজেই তা রাজ্যকে জানায়। বাম আমলে ৯০০ মেগাওয়াটের পুরুলিয়া পাম্প স্টোরেজ প্রকল্পটি গড়ে ওঠার পরে, রাজ্যে নতুন সরকার এসে সিইএ-র পরামর্শ মতো তুর্গা প্রকল্প নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়। ২৫০ মেগাওয়াট করে চারটি ইউনিট মিলিয়ে মোট ১০০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন প্রকল্পটির প্রাথমিক রিপোর্ট তৈরি করা হয়। প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৪,২০০ কোটি টাকা। এই রিপোর্টই সিইএ-র কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। গত এক-দেড় বছর ধরে প্রকল্পটিকে ঘিরে বণ্টন সংস্থার কাছে বার বার বিভিন্ন ধরনের ব্যাখ্যা চেয়ে পাঠায় সিইএ। রাজ্যের বিদ্যুৎ কর্তাদের কাছে তার সদুত্তর পাওয়ার পরেই সম্প্রতি তুর্গা প্রকল্পে সিলমোহর দিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থাটি।

এখন বন মন্ত্রকের ছাড়পত্র পেতে গেলে রাজ্যকে কী করতে হবে?

Advertisement

তুর্গা প্রকল্প নির্মাণ করতে গেলে অযোধ্যায় ৫৭৮ একর জমির প্রয়োজন। আর সেই জমি নেওয়া হচ্ছে রাজ্যের বন দফতরের কাছ থেকে। পরিবেশ ও বন মন্ত্রকের নিয়ম অনুযায়ী, এ ক্ষেত্রে সমপরিমাণ জমি বন দফতরকে ফিরিয়ে দিতে হবে। সেই জমি জোগাড়ের কাজই এখন শুরু হয়েছে। বণ্টন সংস্থার কর্তারা ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে কথা বলে বীরভূম, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলায় সরকারি জমির খোঁজ শুরু করেছে। বণ্টন কর্তাদের দাবি, ইতিমধ্যেই তাঁরা কিছু জমির ব্যবস্থা করে ফেলেছেন। বাকি জমির সংস্থানও তাঁরা করে ফেলতে পারবেন। চলতি অর্থবর্ষের (২০১৬-’১৭) মধ্যেই তাঁরা বন মন্ত্রকের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে পারবেন বলে তাঁদের আশা।

বণ্টন সংস্থার এক কর্তার দাবি, এখন যা পরিস্থিতি, তাতে ২০২২-’২৩ সালের মধ্যে তুর্গা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বাণিজ্যিক ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে। যা খরচ হবে, তার ৭০ শতাংশ টাকা বাজার থেকে ঋণ নেওয়া হবে। বাকি ৩০ শতাংশ বণ্টন সংস্থা নিজেদের কোষাগার থেকে খরচ করবে বলে ওই কর্তা জানান।

পুরুলিয়া বা তুর্গার মতো এই ধরনের জলাধার ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের উপরে এখন অনেক বেশি জোর দিচ্ছে সিইএ। সূত্রের খবর, সিইএ সারা দেশে ৫৬টি জায়গায় এই ধরনের জলাধার ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের জন্য চিহ্নিত করেছে। যেগুলি থেকে ভবিষ্যতে মোট ৯৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতেই কম পক্ষে ন’হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব বলে সিইএ তাদের রিপোর্টে কেন্দ্রকে জানিয়েছে। তুর্গা সেখানে একাই এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন