Akhil Giri

মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমাপ্রার্থনায় ‘অত্যন্ত লজ্জিত’ মন্ত্রী অখিল, তবে সাফাইও দিলেন কুমন্তব্যের

নন্দীগ্রামের একটি জনসভার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর প্রতি কুমন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে কারামন্ত্রী অখিল গিরির বিরুদ্ধে। এ নিয়ে শোরগোল পড়তেই বিজেপির নিশানায় উঠে আসেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২২ ১৮:৪২
Share:

১১ নভেম্বর নন্দীগ্রামের এক জনসভার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর প্রতি কুমন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরির বিরুদ্ধে। এ নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর প্রতি কুমন্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে ক্ষমাপ্রার্থনা করায় ‘অত্যন্ত লজ্জিত’ রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি। সে জন্য তাঁর অনুতাপ আরও বেশি বলে দাবি করলেন অখিল। ওই মন্তব্য করায় আবারও ক্ষমাপ্রার্থনা করলেন তিনি। তিনি যে অনুতপ্ত, তা জানালেও সাফাই গেয়েছেন অখিল। তাঁর দাবি, রাষ্ট্রপতিকে অপমান করতে চাননি তিনি। কেবল মাত্র তুলনা টেনেছিলেন। যদিও বিরোধীরা তাঁকে নিয়ে রাজনীতির খেলা শুরু করেছে।

Advertisement

১১ নভেম্বর নন্দীগ্রামের একটি জনসভার রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে কুমন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে কারামন্ত্রী তথা পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরের বিধায়ক অখিলের বিরুদ্ধে। বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করতে গিয়ে অখিলের মন্তব্য ছিল, ‘‘আমরা রূপের বিচার করি না। তোমার রাষ্ট্রপতির চেয়ারকে আমরা সম্মান করি। তোমার রাষ্ট্রপতিকে কেমন দেখতে বাবা?’’ সেই সভার ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই গোটা দেশ জুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।

অখিলের মন্তব্য ঘিরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আসরে নামে বিজেপি। অখিলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় নালিশ থেকে আদালতে মামলা রুজু— সবই হয়েছে। দলীয় ভাবে এই মন্তব্য তৃণমূল সমর্থন করে না জানালেও তাতে বিতর্ক থামেনি। খোদ অখিল ক্ষমাপ্রার্থনা করলেও উল্টে তাঁর বিরুদ্ধে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে নিন্দা প্রস্তাব আনবেন বলে জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়কেরা। এই আবহে ১৪ নভেম্বর দলের তরফে প্রকাশ্যে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, ‘‘কোনও মানুষের রূপ-রং নিয়ে তাঁকে বিচার করা যায় না।’’ রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ করে যে মন্তব্য করেছেন অখিল, তার জন্য দলের তরফে ক্ষমা চেয়ে নেন তিনি।

Advertisement

এর আগে গত ১১ নভেম্বর তাঁর মন্তব্য নিয়ে শোরগোল শুরু হওয়ায় পরের দিন অখিল মন্তব্য করেছিলেন ‘‘এই ঘটনার জন্য আমি অনুতপ্ত।’’ তবে তিনি ‘ক্ষমাপ্রার্থী’ শব্দটি উচ্চারণ করেননি বলে দাবি। সে সময় তৃণমূলের তরফে টুইটে জানিয়ে দেওয়া হয়, অখিলের বক্তব্যকে সমর্থন করে না দল। অখিলের মন্তব্যের বিরুদ্ধে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কণ্ঠেও প্রতিবাদের সুর শোনা গিয়েছিল। অবশেষে শনিবার সংবাদমাধ্যমের কাছে ‘ক্ষমা’ শব্দটি উচ্চারণ করেছেন অখিল। সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘নন্দীগ্রামের জনসভায় দাঁড়িয়ে আমি রাষ্ট্রপতিকে অপমান করতে চাইনি। কেবল মাত্র তুলনা টেনেছিলাম। তার পর এ বিষয়ে চর্চা শুরু হওয়ায় আমি অনুতপ্ত, জানিয়েছি। কিন্তু বিরোধীরা আমাকে নিয়ে রাজনীতির খেলা শুরু করে। আমি পরিষ্কার করে দিতে চাই, সে দিনের মন্তব্যের জন্য আমি অনুতপ্ত ও ক্ষমাপ্রার্থী।’’ প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার পর অখিল আরও বলেন, ‘‘দেশের রাষ্ট্রপতিকে অপমান করার কোনও সাহস আমার বা আর কারও নেই।’’

তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ায় তিনি যে ‘অত্যন্ত লজ্জিত’, তা জানিয়েছেন অখিল। তাঁর কথায়, ‘‘আমি নিজের মন্তব্যের জন্য খুবই অনুতপ্ত। সেই সঙ্গে অত্যন্ত লজ্জিত যে, আমার জন্য মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন। এই বিষয়টি আমাকে ভীষণ মর্মাহত করেছে। নিজের মন্তব্যের জন্য তাই সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’’ তবে ক্ষমা চাওয়ার জন্য তাঁর এত সময় কেন লাগল, সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি অখিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন