বাধা দেননি বিমানেরা, কারাটেরা খুশি কল্লোলে

বাম জমানার শেষ দিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমে যে ঘটনা ঘটেছিল, এ বার কলকাতায় তেমন হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:৩৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

নতুন জেলা সম্পাদক হওয়ার জন্য জেলা কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন পেয়েছিলেন আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা। আলিমুদ্দিন থেকে বিমান বসুরা গিয়ে বদলে দিয়েছিলেন চিত্রনাট্য। জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর হস্তক্ষেপে জেলা সম্পাদক করা হয়েছিল সুজন চক্রবর্তীকে।

Advertisement

বাম জমানার শেষ দিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমে যে ঘটনা ঘটেছিল, এ বার কলকাতায় তেমন হয়নি। ‘বাংলা লাইন’ বলে যা পরিচিত, তার সম্পূর্ণ উল্টো দিকে গিয়ে কলকাতার সিপিএমে নতুন নেতৃত্ব আসতে পারেন জেনেও ভোটাভুটিতে বাধা দেয়নি আলিমুদ্দিন। স্বয়ং বিমানবাবু কলকাতায় ভোটের দিন ছিলেন গুয়াহাটিতে অসম রাজ্য সম্মেলনে। রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র সম্মেলন সূচনা করলেও শেষে আর যাননি। ভোটাভুটির আগে দিল্লির উড়ান ধরতে বেরিয়ে গিয়েছিলেন পলিটব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিম। অসুস্থতার জন্য বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও সম্মেলনে ছিলেন না। তবে সর্বত্র বামেদের ভোটব্যাঙ্কে যখন ধস চলছে, সেই সময়ে কলকাতায় ভোটাভুটি ঘিরে দীর্ঘ টানাপড়েনে তিনি খুব প্রসন্ন হননি বলেই সিপিএম সূত্রের খবর। আলিমুদ্দিনে আজ, বুধবার থেকে রাজ্য কমিটির বৈঠকে গোটা বিষয়টিই উঠতে পারে।

মানব মুখোপাধ্যায়কে হারিয়ে নির্বাচিত কলকাতার নতুন জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদার কংগ্রেসের সঙ্গে জোট-বিরোধী নেতা বলেই পরিচিত। তাঁর জয়ে দিল্লির প্রকাশ কারাট শিবিরও দলে আনন্দ গোপন রাখেনি। দলের ভিতরে-বাইরে কেউ কেউ বলছেন, বঙ্গ সিপিএমের লাইনকে ধাক্কা দিয়ে খাস কলকাতাতেই জোট-বিরোধিতার তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল।

Advertisement

সিপিএমের বড় অংশই অবশ্য পাল্টা বলছে, রাজ্য কমিটিকে তো কলকাতা জেলা নিয়ন্ত্রণ করবে না! তারা বরং উদাহরণ দিচ্ছে, সাম্প্রতিক কালে টানা জোট-বিরোধী সওয়াল চালিয়েও জলপাইগুড়িতে সলিল আচার্য, পূর্ব বর্ধমানে অতিন্ত্য মল্লিক, পশ্চিমে গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় জেলা সম্পাদক রয়েছেন। সেই তালিকায় কলকাতা যোগ হল। রাজনৈতিক ভাবে রাজ্য নেতৃত্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের বিরোধী সুরকে আলিমুদ্দিন ‘চেপে’ দিল না— একে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের নমুনা হিসাবেই পেশ করছে দলের ওই অংশ।

তবে এর মধ্যেও প্রশ্ন উঠেছে কলকাতার সম্মেলনে উপস্থিত তিন রাজ্য নেতা সেলিম, সুজন চক্রবর্তী ও রবীন দেবের ভূমিকা নিয়ে। রাজনৈতিক ভাবে এঁরা তিন জনেই জোটের পক্ষে। অথচ সাংগঠনিক স্তরে তাঁরা জোট-বিরোধী অংশের সহায়ক হয়েছেন! কলকাতায় ‘ঘরের মধ্যে ঘর’ হয়ে যাচ্ছে দেখে কল্লোলের সঙ্গে সুদীপ সেনগুপ্তের মতান্তর কাফে-তে বসে মিটিয়ে দিয়েছেন এঁদের এক জন! সেই সঙ্গেই কলকাতার এক নেতার মত, ‘‘মানবদা’কে নিয়ে ব্যক্তিগত স্তরে কিছু লোকের সমস্যা আছে। তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো কাউকে সামনে রাখলে হয়তো জল এত দূর গড়াত না!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement