নরেন্দ্র সিংহ তোমর। —নিজস্ব চিত্র।
অস্ত্র একটাই। বিজেপি হোক বা বাম-কংগ্রেস, শাসকদলের বিরুদ্ধে সবার হাতিয়ার সেটাই। সোমবার দুর্গাপুরে প্রচারে এসে দুর্নীতির প্রশ্নেই তৃণমূলের সমালোচনা করলেন বিজেপি এবং সিপিএমের নেতারা।
এ দিন শহরের ট্রাঙ্ক রোড ফুটবল মাঠে বিজেপির প্রচারে এসে কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর অভিযোগ করলেন, ‘‘সন্ত্রাস, দুর্নীতিতে ভরে গিয়েছে রাজ্য।’’ আর ডিএসপি টাউনশিপের ডি সেক্টর মাঠে এক সভায় সিপিএমের মানব মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর দলের সবাই একের পর এক কীর্তি করে যাচ্ছে। আর তিনি চোখ বুজে আছেন!’’
দুর্গাপুর পূর্বের সিপিএম প্রার্থী সন্তোষ দেবরায়ের সমর্থনে আয়োজিত মানববাবুর সভায় ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মনোজ পাণ্ডে, জেলা শিল্পাঞ্চল সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী, প্রবীণ শ্রমিক নেতা বংশীবদন কর্মকারেরা। দেবেশবাবুর অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল নাগাড়ে মানুষকে ভয় দেখিয়ে চলেছে।’’ সভা চলাকালীন বাসে করে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা মাঠের পাশের রাস্তা দিয়ে একাধিক বার স্লোগান দিতে দিতে যান। তা দেখে প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক বিপ্রেন্দু চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘দলটার শিষ্টাচার নেই। এ ভাবে ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না।’’
বিজেপির সভায় ইস্পাত মন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর জানান, দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের (ডিএসপি) উৎপাদন বাড়াতে ১৯ হাজার কোটি টাকা লগ্নি করা হবে। ডিএসপি-র প্রাক্তন কর্মীদের আবাসন সমস্যার বিষয়টিও খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন মন্ত্রী। রবিবার দুর্গাপুরে এসে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ আশ্বাস দিয়েছিলেন, ডিএসপি-র অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের আবাসন সমস্যার বিষয়টি ইস্পাত মন্ত্রীকে জানাবেন। এ দিন ইস্পাত মন্ত্রী বলেন, ‘‘দুর্গাপুরের দুই বিজেপি প্রার্থী ভোটে জেতার পরে ডিএসপি-র শ্রমিক প্রতিনিধিদের নিয়ে দিল্লি যাবেন। মানবিক দৃষ্টিতে সমস্যার সুরাহা করা হবে।’’ মন্ত্রী জানান, আগে ডিএসপি-র উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ১৮ মিলিয়ন টন। আধুনিকীকরণের পরে তা বেড়ে হয়েছে ২৪ মিলিয়ন টন। এ বার তা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ১৯ হাজার কোটি টাকা লগ্নিও করা হবে বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, ‘‘বাম আমলে রাজ্যে বেকারত্ব বেড়েছিল। শিল্প, উন্নয়ন হয়নি। গত পাঁচ বছরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। সন্ত্রাস, দুর্নীতিতে ভরেছে রাজ্য।’’
সিপিএমের মানববাবুর অভিযোগ, কলকাতায় উড়ালপুল ভাঙার সময় বহু মানুষ উদ্ধারকাজে হাত লাগান। কে, কোন রাজনীতি করেন তা নিয়ে কেউ ভাবেননি। মানববাবুর বক্তব্য, ‘‘কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সেখানে ঢুকলেন, বাম আমলের প্রকল্প বলতে বলতে। তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, শুধুই তৃণমূল নেত্রী নন, তা বোঝেন না।’’ মানববাবুর আরও অভিযোগ, গত পাঁচ বছরে কোনও প্রকল্প শুরু হয়নি। তাই শেষ হওয়ার প্রশ্ন নেই।