Corruption

পঞ্চায়েত সমিতির দুই সভাপতির বিরুদ্ধে নালিশ

ঘটনায় দলের অন্দরের কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি শৈবাল।

Advertisement

প্রসেনজিৎ সাহা

ক্যানিং শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২০ ০৩:১৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

সরকারি চাল, ত্রিপল নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে নাম জড়াল ক্যানিং ১ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতির। পঞ্চায়েত সমিতির ২০ তৃণমূল সদস্য তাঁর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন প্রশাসনে।

Advertisement

যদিও সব অভিযোগই মিথ্যা বলে দাবি করেছেন ওই সভাপতি অনিমা মিস্ত্রি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমাকে সভাপতির চেয়ারে কাঠের পুতুল করে বসিয়ে রেখে দেদার দুর্নীতি করতে চেয়েছিল ওরা। আমি সে সব মেনে নিতে পারিনি। তাই তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শৈবাল লাহিড়ির অনুগামী কিছু পঞ্চায়েত সমিতি সদস্য এমন অভিযোগ তুলছেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমি যা কাজ করেছি, তার সব তথ্য-প্রমাণ হাতে আছে।’’

ঘটনায় দলের অন্দরের কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি শৈবাল। অনিমার বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের ওই অংশটি জেলা তৃণমূল সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তীর কাছেও অভিযোগ করেছেন। যদিও এ বিষয়ে কথা বলার জন্য যোগাযোগ করা হলে ফোন ধরেননি শুভাশিস। জবাব দেননি এসএমএসের। ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসক রবিপ্রকাশ মিনা বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’

Advertisement

দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, শৈবালের অনুগামী হিসাবেই এক সময়ে ভোটে জিতে ক্ষমতায় এসেছিলেন অনিমা। পরে দলের বিরুদ্ধ গোষ্ঠী, ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি পরেশরাম দাসের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। তারপর থেকেই দু’পক্ষের টানাপড়েন, কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু হয়েছে। কিছু দিন আগেই বিডিওর বিরুদ্ধে কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রশাসনের দ্বারস্থ হন অনিমা। তার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানালেন কিছু পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য।

ক্যানিং ১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সংখ্যা ২৯ জন। তাঁর মধ্যে ২০ জন লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, লকডাউনের পরে সরকারি স্পেশাল জি আর-এর ১৫৫ কুইন্টাল চাল টাকার বিনিময়ে সভাপতি বাইরে বিক্রি করে দিয়েছেন। আমপানের পরে দুর্গতদের জন্য আসা ত্রিপলও বিক্রি করেছেন। প্রাথমিক স্কুলের পোশাকের বরাত দেওয়া নিয়ে ঠিকাদারি সংস্থার কাছ থেকে কাটমানি খেয়েছেন বলেও সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যেরা। অভিযোগ আছে আরও এক গুচ্ছ।

পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি শ্যামলেন্দু মণ্ডল বলেন, ‘‘স্থায়ী সমিতির বৈঠকের সিদ্ধান্তকে মান্যতা দিতে চান না উনি। নিজের স্বার্থপূরণের জন্য নানা অনৈতিক কাজ করেন।’’ দাঁড়িয়া পঞ্চায়েত এলাকায় সরকারি প্রকল্পের শৌচাগার নির্মাণ নিয়ে বিডিওর বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন সভাপতি, তা-ও ‘পরিকল্পিত’ বলে দাবি শ্যামলেন্দুদের। ক্যানিং ১ এর বিডিও নীলাদ্রি শেখর দে আলাদা করে কিছু বলতে চাননি।

অন্য দিকে, আমপানের টাকা নিয়ে দুর্নীতি, স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছে কাকদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, তৃণমূলের মমতাজ মোল্লার বিরুদ্ধেও। রবীন্দ্র পঞ্চায়েতে রামচন্দ্রনগর গ্রামে দোতলা বড় বাড়ি তাঁর। আমপানে তেমন কোনও ক্ষতিও হয়নি বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। অথচ, ব্লক প্রশাসনের দফতরে শুক্রবার ক্ষতিপূরণের যে তালিকা বেরিয়েছে, তাতে মমতাজের স্বামী, শাশুড়ি ও ননদের নাম আছে জানা দিয়েছে। মমতাজের সঙ্গে ফোন বেজে গিয়েছে। মেসেজেরও উত্তর মেলেনি। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিডিও দিব্যেন্দু সরকার। তৃণমূল বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা বলেন, ‘‘কোনও দুর্নীতি হয়ে থাকলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। দলও বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।’’

সহ প্রতিবেদন: দিলীপ নস্কর

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন