গরম করতে গ্যাস খরচ কম হবে, এই ভেবে অনেকে ফ্রিজ থেকে খাবার বার করে ঘরের উষ্ণতায় রেখে দেন অনেকক্ষণ। কাজটা ভুল, বলছেন অমিতাভ চক্রবর্তী। মার্কো পোলো রেস্তোরাঁ গ্রুপের এগজিকিউটিভ শেফ অমিতাভবাবুর বক্তব্য, ফ্রিজের খাবার, এমনকী ডিপ ফ্রিজের খাবারও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বসিয়ে দিন উনুনে। বেশি তাপে, সময় নিয়ে ফোটান। ঘরের উষ্ণতায় রেখে দেওয়া মানে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতে সাহায্য করা।
খাবার গরম করার সময়ে যথেষ্ট সময় ধরে না ফোটালেও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হবে না। অনেক সময়ে দেখা যায়, ডাল ফোটালে ডালের উপর গ্যাঁজলার মতো ফুটে ওঠে। এটা মিলিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা দরকার। যখন বেশি পরিমাণে খাবার গরম করছেন, তখন গোটা খাবারটাই যেন ধোঁয়া-ওঠা গরম হয়, সেটা দেখা দরকার। নাড়াচাড়া করে গোটা খাবারটা সমান গরম করে নিন।
যাঁরা মাইক্রোওয়েভে খাবার রান্না করেন, তাঁদেরও খাবারটা বের করে নাড়াচাড়া করে ফের ঢুকিয়ে গরম করতে হবে। না হলে পাত্রের পাশের অংশ গরম হবে, মধ্যিখানটা যথেষ্ট গরম হবে না। আর তা না হলেই ব্যাকটেরিয়া গজানোর আদর্শ অবস্থা তৈরি করে দেওয়া হয়।
রান্না-করা খাবার ফ্রিজে তোলার সময়েও যতটা সম্ভব দ্রুত তা ঠান্ডা করতে হবে। ছড়ানো বাসনে রান্না-করা খাবার রাখতে হবে ঢেলে, যাতে ঠান্ডা হয় তাড়াতাড়ি। মনে রাখবেন, উপরতল যত ছড়ানো হবে, খাবার তত তাড়াতাড়ি ঠান্ডা হবে। ধোঁয়া ওঠা বন্ধ হলে ফ্রিজে পুরতে হবে। ঘণ্টা দুয়েকের বেশি ঘরের উত্তাপে খাবার রাখা ঠিক নয়। বিশেষ করে এই বর্ষাকালে চিংড়ি, মাছ, চিজ, সন্দেশের মতো জিনিসে খুব সহজে ফাংগাস বা ছত্রাক পড়ে যায়।
মনে রাখবেন, সব সময়ে খাবার দেখে, স্বাদ নিয়ে বা শুঁকে বোঝা যায় না, তা ঠিক আছে কিনা। যা ঠিক মনে হয়, তা-ও আসলে বিপজ্জনক হতে পারে। মনে রাখতে হবে, পেটের গণ্ডগোল হলে আমরা মনে করি, শেষ যে খাবার খেয়েছি তা থেকেই সমস্যা হয়েছে। তা না-ও হতে পারে। কোনও খাবার খাওয়ার এক থেকে তিন দিন পরে তা থেকে খারাপ হতে পারে পেট। কী থেকে পেট খারাপ হল বোঝা সহজ নয় বলে খাবার হতে হবে ১০০ শতাংশ নিরাপদ।