আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রার্থী তালিকা এখনও ঘোষণা হয়নি। কিন্তু প্রার্থী বাছাই নিয়েই গোলমাল দেখা দিল বাম শরিক সিপিআইয়ের ঘরে। অকুস্থল সেই নন্দীগ্রাম! জমি আন্দোলন এবং রাজ্যে পরিবর্তনের আঁতুড়ঘর!
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী, নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে এ বার তৃণমূলের প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। বাম-কংগ্রেস আসন সমঝোতা হলেও এখন পর্যন্ত যা খবর, তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওই কেন্দ্রে বামফ্রন্টের তরফে সিপিআই-ই লড়বে। দলীয় সূত্রের খবর, সিপিআই জেলা নেতৃত্বের তরফে নন্দীগ্রামের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে কবীর মহম্মদের নাম পাঠানো হয়েছে। দলের রাজ্য কার্যনির্বাহী কমিটি বৈঠকে বসে সেই নাম অনুমোদনও করেছে। কিন্তু স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মতামত যাচাই না করেই কেন প্রার্থী বেছে ফেলা হল, সেই প্রশ্ন তুলছেন নন্দীগ্রামের সিপিআই নেতা-কর্মীরা। ক্ষোভে ইস্তফা দেওয়াও শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন- ভোটের ঘণ্টা বাজতেই মমতার প্রার্থী ঘোষণা, তালিকায় তারকার মেলা
সিপিআই সূত্রের খবর, দলের নন্দীগ্রাম-১ আঞ্চলিক পরিষদের ২১ জন সদস্যের মধ্যে ১৪ জনই এমন একতরফা ভাবে প্রার্থী বাছাইয়ের বিরুদ্ধে। তাঁদের মধ্যে তিন জন ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন কমিটি থেকে। পদত্যাগের খবর স্বীকার করে ওই আঞ্চলিক পরিষদের সহ-সম্পাদক সৌমক বল শুক্রবার বলেন, ‘‘স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই জেলা নেতৃত্ব প্রার্থী ঠিক করে ফেলেছেন। আমাদের দল গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে চলে। সেখানে এমন পদ্ধতিতে প্রার্থী বাছাই হবে কেন? তাই পদত্যাগ করেছি।’’ নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক ইলিয়াস মহম্মদের ছেলে শেখ সাদ্দাম হোসেনও ওখানে সিপিআইয়ের আঞ্চলিক পরিষদে আছেন। তিনি অবশ্য ইস্তফা দেননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কমিউনিস্ট পার্টি গরিব মানুষের দল। এই দলটাকে ভালবাসি বলেই কাজ করছি।’’
বস্তুত, দলের একাংশ চায়, সদস্যপদ ফিরে পাওয়ার পরে ইলিয়াসকেই এ বার নন্দীগ্রামে প্রার্থী হিসাবে ফিরিয়ে আনা হোক। তবে পদত্যাগকারীরা প্রার্থী হিসাবে অন্য কাউকে চান কি না, সেই প্রশ্নে প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি। তবে সিপিআইয়ের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক অশোক দিন্দার দাবি, এমন কোনও সমস্যার কথা তাঁদের জানা নেই। অশোকবাবু বলেন, ‘‘আমাদের শৃঙ্খলাপরায়ণ দল। সেখানে এমন ঘটনা ঘটার কথাই নয়। হয়তো রাজনৈতিক অপপ্রচার হচ্ছে।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘যদি কেউ এমন কথা বলেও থাকেন, তাঁরা আমাদের দলের কেউ হতে পারেন না!’’ সিপিআই রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যেরও বক্তব্য, ‘‘রাজ্যস্তরে আমাদের কাছে এখনও এমন কোনও খবর আসেনি।’’