উপাচার্যের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিতর্ক

শনিবার কলকাতায় ইন্টারন্যাশনাল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের এক অনুষ্ঠানে স্বাধিকার ও নেতৃত্ব সংক্রান্ত বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি অনিল সহস্রবুদ্ধে বলেন, স্বাধীনতার আগে কলকাতা, মুম্বই, মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম সারিতে ছিল। কিন্তু নেতৃত্বদানের অক্ষমতার ফলে তাদের মান নিম্নমুখী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৮ ০৪:৪২
Share:

অনিল সহস্রবুদ্ধে

মেধা যাচাই না-করে উপাচার্য নিয়োগের কারণেই একদা ঐতিহ্যশালী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে বলে মন্তব্য করলেন অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশনের চেয়ারম্যান অনিল সহস্রবুদ্ধে। শনিবার কলকাতায় ইন্টারন্যাশনাল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের এক অনুষ্ঠানে স্বাধিকার ও নেতৃত্ব সংক্রান্ত বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, স্বাধীনতার আগে কলকাতা, মুম্বই, মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম সারিতে ছিল। কিন্তু নেতৃত্বদানের অক্ষমতার ফলে তাদের মান নিম্নমুখী। তাঁর লিখিত বক্তৃতায় এর কারণ হিসেবে মেধার বদলে রাজনৈতিক অনুমোদনের ভিত্তিতে উপাচার্য নিয়োগকে দায়ী করেছেন সহস্রবুদ্ধে।

Advertisement

তাঁর এই বক্তব্যের পরেই রাজ্যের শিক্ষামহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে সহস্রবুদ্ধের রাজনৈতিক যোগসূত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলা হয়েছে, কেন্দ্রের শাসক দলের অঙ্গুলিহেলনেই এ সব কথা বলছেন তিনি। দলের সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘সহস্রবুদ্ধে কে? এ সব কথা যাঁরা বলেন, তাঁদের বুদ্ধি নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। কেন্দ্রীয় সরকার শিক্ষার দায়িত্ব সঙ্ঘ পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে। অম্বানীর প্রতিষ্ঠান নিয়ে কী চলছে, তা তো সবাই দেখছি। এ সব কথার গুরুত্ব দেওয়ার মানে হয় না।’’

তৃণমূলের আর এক সাংসদ সুগত বসুর বক্তব্য, ‘‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের মানের একটু অবনমন যে হয়েছে, সে কথা স্বীকার করতেই হবে। কিন্তু বিজেপি-ঘনিষ্ঠদের মুখ থেকে এ ব্যাপারে কোনও সমালোচনা শুনতে আমরা রাজি নই। ওঁরা নিজেরা দেশ জুড়ে শিক্ষাক্ষেত্রে কী করছেন, সেটা আগে ভেবে দেখুন। অস্তিত্বহীন একটি প্রতিষ্ঠানকে সেরার তকমা দিতেও তো ওঁদের বাধেনি!’’

Advertisement

বিজেপির দিকে আঙুল তুলে বিরোধীদের প্রশ্ন, এর আগে পুণে ফিল্ম ইনস্টিটিউট বা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর হিস্টোরিক্যাল রিসার্চের প্রধান পদে নিয়োগ কীসের ভিত্তিতে হয়েছিল? সেই সব নিয়োগ নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল সারা দেশ। শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুটার সাধারণ সম্পাদক শ্রুতিনাথ প্রহরাজ বলেন, ‘‘নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর এই পদ্ধতির কোনও যুক্তি আছে বলে মনে হয় না। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তার পঠনপাঠনের সামগ্রিক ব্যবস্থায় অতীতের গরিমায় না হলেও মানের ব্যাপক অধঃপতন হয়েছে বলে মনে করি না।’’

শাসক দলের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সুজয় ঘোষ বলেন, ‘‘আমি এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করছি। এটা উপাচার্য এবং রাজ্য সরকারকে অপমান করার জন্য বলা হচ্ছে। যে বিশ্ববিদ্যালয় ভূমিষ্ঠই হয়নি, তাকে উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় অনুদান দিচ্ছে। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয় সেই সাহায্য পাচ্ছে না।’’ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করা হলে তিনি ফোন তোলেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন