প্রতীকী ছবি।
এক হাজার গো-দান আগেই হয়ে গিয়েছে। সঙ্গে ছাগল-শুয়োরও ছিল। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে এ বার ২৫ লাখ মুরগি বিলির সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন দফতর। আড়াই লাখ পরিবারের মধ্যে তা বিলি করা হবে এপ্রিল থেকে জুন মাসে। এই সময়েই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হতে পারে বলে নবান্নের খবর।
পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে সরকার মুরগি বিলি করলে তা নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের সামিল হবে না কি-এই প্রশ্নও উঠেছে। কিন্তু সরকারি সূত্রের দাবি, ২০১৮-১৯ সালে সারা বছর ধরে সাড়ে ৭ লাখ পরিবারকে মুরগি দেওয়া হবে। সেই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে গেলে আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাসেও কাজ চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। সেই কারণে এপ্রিল-মে-জুন মাসে আড়াই লাখ পরিবারকে মুরগি ১০টি করে মুরগি ছানা দেওয়া হবে। পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার আগেই উপভোক্তাদের তালিকা চূড়ান্ত করে রাখা হচ্ছে। ফলে ভোট ঘোষণার পর মুরগি ছানা বিলির কাজ চললেও নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ হবে না।
ভোটের সময় এই বিলি বন্টনের ঘটনা যে রাজনীতির বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারে তা প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন দফতরের কর্তারা আঁচ করেছেন। দফতরের প্রধান সচিব বি পি গোপালিকা জেলাশাসকদের চিঠি দিয়ে ৩১ মার্চের মধ্যে উপভোক্তাদের তালিকা চূড়ান্ত করতে বলেছেন। একবার মুরগি প্রাপকদের তালিকা তৈরি হলে গেলে তা চালু প্রকল্প হিসাবে ভোটের সময়েই দেখানো যাবে। একই কারণে বীরভূমের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যসচিব মলয় দে নির্দেশ দিয়েছেন, যে সব প্রকল্পের দরপত্র চাওয়ার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে, সেখানে যেন দ্রুত কাজের বরাত দেওয়া হয়। রাস্তা, পানীয় জল, বিদ্যুৎ ইত্যাদির কাজও ভোটের সময় চালিয়ে যাওয়ার জন্য মুখ্যসচিব নির্বাচন ঘোষণার আগেই ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ দিতে বলেছেন বলে অনেকে মনে করছেন।
সরকার অবশ্য শুধু মুরগি বিলিই নয় বিভিন্ন জেলায় ২০১৭-য় এক হাজার গরু দানও করেছে। গ্রামে হাঁস-মুরগি দেওয়া সরকারের রুটিন প্রকল্প হলেও এই সময়ে গো-দানের কর্মসূচি উল্লেখযোগ্য। প্রতিটি গরুর জন্য ২৭ হাজার টাকা পর্যন্ত বরাদ্দ করেছে সরকার। এই টাকায় এক বছর বয়সী গরুর পাশাপাশি ১২ মাসের খাবারের খরচও দেওয়া হয়েছে। ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা খরচ করে গো-দানের এই কর্মসূচি বিজেপির গরু রাজনীতির পাল্টা চাল বলেও অনেকের মত। তবে শুধু গরু নয় ৬২ হাজার ছাগল এবং ৫ হাজার শুয়োরও প্রতিপালনের হাতে দেওয়া হয়েছে।
তবে এক কর্তার কথায়,‘‘যে সংখ্যক গরু, ছাগল, শুয়োর এবং মুরগি দেওয়া হচ্ছে তার ফলাফল পঞ্চায়েতেই দেখা যাবে।’’