Abhishek Banerjee

পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পর অভিষেকের ‘নবজোয়ার’ চলবে? না কি ‘বিকল্প পথ’ নেবে তৃণমূল?

উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার মতো গুরুত্বপূর্ণ জেলায় অভিষেকের ‘নবজোয়ার’ পৌঁছনোর আগেই পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাওয়ার কথা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২৩ ১৯:৫৬
Share:

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পর কি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচি চলবে? বৃহস্পতিবার রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করা পর থেকেই এই নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। সাধারণ ভাবে অভিষেকের এই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে পঞ্চায়েত ভোটের প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। আশঙ্কা নেই আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনেরও। কিন্তু জল্পনা হল, যে স্থানীয় জনমতের ভিত্তিতে গোপন ব্যালটে ভোটপ্রক্রিয়ায় পঞ্চায়েতের প্রার্থী বেছে নেওয়ার যে উদ্দেশ্যে অভিষেক ওই কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন, পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট কি তা সিদ্ধ হওয়ার পথে ‘অন্তরায়’ হতে পারে?

Advertisement

গত ২৫ এপ্রিল কোচবিহার থেকে অভিষেক তাঁর এই কর্মসূচির সুচনা করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, পরবর্তী দু’মাস ধরে রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ঘুরে জনসংযোগের পাশাপাশি প্রার্থিবাছাই প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করবেন তিনি। অর্থাৎ, স্বাভাবিক নিয়মেই ২৪ জুলাই পর্যন্ত ‘নবজোয়ার’ চলার কথা ছিল। এরই মধ্যে স্কুলে নিয়োগ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিবিআইয়ের নোটিস পেয়ে বাঁকুড়ার কর্মসূচি স্থগিত রেখে গত ২০ মে নিজাম প্যালেসে (কলকাতায় সিবিআইয়ের দফতর) হাজিরা দিয়েছিলেন অভিষেক। ফলে কর্মসূচির সময়সীমা দীর্ঘায়িত হওয়ার একটা সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ পঞ্চায়েত ভোটের যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে মনোনয়ন পেশের শেষ দিন ১৫ জুন। প্রত্যাহারের শেষ দিন ২০ জুন। অর্থাৎ, উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার মতো গুরুত্বপূর্ণ জেলায় অভিষেকের ‘নবজোয়ার’ পৌঁছনোর আগেই মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে ওই দুই জেলায় অভিষেকের কর্মসূচি থেকে ‘সাধারণ মানুষের মতামতের ভিত্তিতে প্রার্থী নির্বাচন’ কী ভাবে হতে পারে, আলোচনা-জল্পনা-কৌতূহল তা নিয়েই।

উত্তর ২৪ পরগনার বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের অন্যতম মুখপাত্র তাপস রায় অবশ্য বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, এই ‘সমস্যা’ সমাধানের পথ ইতিমধ্যেই খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন এবং স্বশাসিত সংস্থা। তারা তো আর কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি দেখে ভোটের দিন ঘোষণা করবে না! ফলে সমস্যার সমাধানে আমাদেরই বিকল্প পথ খুঁজতে হয়েছে। ইতিমধ্যেই তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন। তা মেনে কাজ শুরুও হচ্ছে।’’ যদিও ‘নবজোয়ার’ থেকে জনমত সংগ্রহ করে পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী নির্বাচনের ‘বিকল্প পথ’ কী হবে, সে বিষয়ে বিশদে কিছু বলতে চাননি বর্ষীয়ান নেতা তাপস।

রাজ্য জুড়ে পঞ্চায়েত ভোটের আয়োজন চলাকালীন ‘নবজোয়ায়’ কর্মসূচির মতো দীর্ঘমেয়াদি বড় জমায়েতে কোনও আইনি অসুবিধা হতে পারে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। যদিও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এক আধিকারিক বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘নবজোয়ার রাজনৈতিক কর্মসূচি। এর সঙ্গে ভোট ঘোষণার কোনও সম্পর্ক নেই। ওই কর্মসূচি যে ভাবে চলছে, তাতে পঞ্চায়েত ভোট আয়োজনেরও কোনও অসুবিধা নেই।’’ ওই আধিকারিক জানান, নির্বাচনী বিধি মেনে ‘নবজোয়ার’-এর মতো প্রচার কর্মসূচি চালাতে কোনও বাধা নেই তৃণমূলের। তাঁর কথায়, ‘‘রাজনৈতিক কর্মসূচিতে কোনও আপত্তি নেই। শুধু সরকারের নতুন কোনও প্রকল্পের প্রলোভন দেখানো যাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন