Anubrata Mondal Viral Audio

ক্ষমা চাইলেন অনুব্রত! পুলিশ আধিকারিককে ফোনে হুমকি ও গালিগালাজের অডিয়ো ফাঁস হল কী করে? তুললেন সে প্রশ্নও

চাপের মুখে শেষমেশ পুলিশের কাছে ক্ষমা চাইলেন অনুব্রত মণ্ডল। বীরভূমের ‘দোর্দণ্ডপ্রতাপ’ তৃণমূল নেতা ক্ষমা চাওয়ার চিঠিতে লিখেছেন, ‘‘আমার ওই কথাগুলো বলা উচিত হয়নি। আমি দুঃখিত।’’

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২৫ ১৫:৫৭
Share:

পুলিশের কাছে ক্ষমা চাইলেন অনুব্রত মণ্ডল। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

চাপের মুখে শেষমেশ পুলিশের কাছে ক্ষমা চাইলেন অনুব্রত মণ্ডল। বীরভূমের ‘দোর্দণ্ডপ্রতাপ’ তৃণমূল নেতা ক্ষমা চাওয়ার চিঠিতে লিখেছেন, ‘‘আমার ওই কথাগুলো বলা উচিত হয়নি। আমি দুঃখিত।’’ সেই সঙ্গে কিছু প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। তাঁর প্রশ্ন, বোলপুরের আইসির সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের অডিয়ো কী ভাবে ফাঁস হল?

Advertisement

ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপ-কাণ্ড নিয়ে শোরগোল প়ড়তেই শুক্রবার দুপুরে অনুব্রতকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলেছিল তৃণমূল। সময় দেওয়া হয়েছিল চার ঘণ্টা। দুপুর ২টো ৩২ মিনিটে সমাজমাধ্যমে সে কথা জানিয়ে দেয় শাসকদল। তার মিনিট চল্লিশের মধ্যেই চিঠি লিখে ক্ষমা চান অনুব্রত। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, পুলিশের এক জন সাধারণ কর্মী থেকে বড় অফিসার সকলেই রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছের। তাঁদের অপমান করার কথা তিনি ভাবতেই পারেন না। তৃণমূল নেতা লিখেছেন, ‘‘সাম্প্রতিক ঘটনায় আমি দুঃখিত। দিদির পুলিশের কাছে এক বার কেন, একশো বার ক্ষমা চাইতে পারি। আসলে আমি নানা রকম ওষুধ খাই। দিদির পুলিশের বিরুদ্ধে কেউ কোনও অভিযোগ করলে মাথা গরম হয়ে যায়। সতিই আমি দুঃখিত।’’

অনুব্রত সংবাদমাধ্যমেও বলেন, ‘‘আমি নানা রকম ওষুধ খাই। শুনলাম, আমাদের এক তৃণমূল কর্মীর ছেলেকে পুলিশ মারধর করেছে। নিরীহ ছেলে। ওটা শুনেই আমার মাথা গরম হয়ে গিয়েছিল। ওই পুলিশও আমাকে খারাপ কথা বলেছে।’’

Advertisement

তবে অডিয়ো-কাণ্ডের নেপথ্যে চক্রান্ত থাকতে পারে বলেও চিঠিতে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনুব্রত। ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি লিখেছেন, ‘‘আপনাদের ভাবতে হবে, তিনটে মহকুমা— বোলপুর, সিউড়ি, রামপুরহাটে মানুষের বিশাল মহামিছিল দেখে কারা ভয় পেল? বিজেপি কী করে আমার আর আমাদের বোলপুরের আইসির সাথে গালমন্দের ফুটেজ পেল? কে দিল? কোনও চক্রান্ত নেই তো?’’

বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুব্রতের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার আমনদীপ আনন্দবাজার ডট কমকে বলেছেন, ‘‘মিস্টার অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস)-র ২২৪ (সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও কর্তব্যরত কর্মীকে হুমকি), ১৩২ (সরকারি কর্মচারীকে হেনস্থা), ৭৫ (শ্লীলতাহানি ও হেনস্থা) এবং ৩৫১ (হুমকি) ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।’’ পরে দুপুরে তৃণমূলের পার্টি অফিসে গিয়ে অনুব্রতকে নোটিসও ধরিয়েছে পুলিশ। অনুব্রত ওয়াই প্লাস ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পান। সেই সঙ্গে জেলা পুলিশের চার কর্মীও তাঁর নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই চার পুলিশকর্মীকে অনুব্রতের নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে তুলে নিতে পারেন পুলিশ সুপার।

সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি অডিয়ো ক্লিপে (ওই অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম) শোনা যায়, ফোনে কথা বলার সময় এক ব্যক্তি আর এক ব্যক্তিকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করছেন। অভিযোগ, ওই কথোপকথন অনুব্রত এবং বোলপুর থানার আইসি লিটনের। আইসি-কে গালিগালাজ করছিলেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা। অডিয়ো ক্লিপে শোনা যায়, আইসি-র স্ত্রী এবং মায়ের নামেও গালিগালাজ করা হচ্ছে। যদিও ভাইরাল হওয়া অডিয়ো প্রসঙ্গে আনন্দবাজার ডট কম অনুব্রতের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ওই কণ্ঠস্বর তাঁর নয়। তিনি এ-ও দাবি করেন যে, এক বার তিনি আইসি-কে ফোন করেছিলেন। কিন্তু তাঁকে অপমান করে ফোন রেখে দিয়েছিলেন আইসি।

প্রসঙ্গত, বোলপুরের আইসি লিটনকে নিয়ে প্রকাশ্যেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন অনুব্রত। গত বৃহস্পতিবার দলীয় কর্মসূচি শেষে অনুব্রত অভিযোগের সুরে বলেছিলেন, ‘‘আইসি এফআইআর করতে গেলেও টাকা চান। গত দু’মাস ধরে এই আইসিকে সরানোর জন্য আমি এসপি, অ্যাডিশনাল এসপি, এমনকি, ডিজি রাজীব কুমারকেও বলেছি।’’ অর্থাৎ, দু’মাস ধরে চেষ্টা করেও আইসিকে সরাতে পারেননি অনুব্রত! তার পরেই প্রকাশ্যে ওই অডিয়ো ক্লিপ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement