সলমা খাতুন।
বয়স সতেরো। থাকে উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙ্গা পঞ্চায়েত এলাকায়। পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। এ বারেই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে সে। রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী স্কলারশিপ পেয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা করা জনধন যোজনার অধীনে ব্যাঙ্ক খাতা না খুললে সরাসরি টাকাটি নিজের অ্যাকাউন্টে পেত না। কৃষ্ণনগরের অনেক গরিব পরিবার নরেন্দ্র মোদীর জনধনে ব্যাঙ্কের খাতা না খুললে পেনশনও সহজে তুলতে পারতেন না।
নদিয়ার সুরজিৎ দত্তও প্রধানমন্ত্রীর আবেদনে সাড়া না দিয়ে যদি শৌচাঘর বানাতে এগিয়ে না আসতেন, তা হলে হয় তো আড়াইশো জনের বেশি লোকের রোজগারের ব্যবস্থা হতো না। তাঁর অধীনে মিস্ত্রিরা আজ দিনে সাড়ে তিনশো-চারশো টাকা উপার্জন করেন। শ্রমিকরা ৩০০ টাকা আর গাড়ির মালিকরা দিনপ্রতি ৭০০-১২০০ টাকা। নবদ্বীপের মহিশূরা গ্রামের মহিলারাও আজ যে ভাবে এগিয়ে এসেছেন সবরা শৌচাঘর কর্মসূচিতে, সেটিও হয় তো হতো না প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া না দিলে। আর এ সবের কিছুই হতো না, যদি না জেলার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আম-জনতাকে সক্রিয় ভাবে সজাগ না করতেন।
এ ভাবেই গোটা দেশের প্রায় সাড়ে ছ’শোর মধ্যে ৭৪টি জেলাকে বেছে নিয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনকে স্বীকৃতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যে তালিকায় আছে উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়া।
দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে এক অনুষ্ঠানে মোদী বলেছেন, প্রতিবারই ‘সিভিল সার্ভিস’ দিবসে বিভিন্ন জেলা প্রশাসনকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। কিন্তু এ বার নিয়মটি বদলে ফেলা হয়েছে। এ বারে আর কোনও সুপারিশ বা ভাল রিপোর্টের ভিত্তিতে জেলাকে বেছে নেওয়া হয়নি। বরং একটি টিম গঠন করে খতিয়ে দেখা হয়েছে, কারা কারা ভাল কাজ করেছে। বিশেষ করে চারটি ক্ষেত্রে— প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনা, স্বচ্ছ ভারত, স্বচ্ছ বিদ্যালয় ও মাটির স্বাস্থ্য নিরূপণ। ভবিষ্যতে জেলাগুলির মধ্যে আরও ‘স্বাস্থ্যকর’ প্রতিযোগিতা করানোই লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রীর।