দূর রাজ্যের সাফল্যে মিলল অক্সিজেন

হাতে ‘ভি’, ম্লান পদ্ম

বিজয় মিছিলটা আকারে তেমন দীর্ঘ না হলেও শীতের বিকেলে বহমপুরের রাস্তায় হেঁটে যাওয়া মানুষগুলির মুখ অনেক কথাই যেন বলছিল। শব্দ সাজিয়ে নয়। তাঁদের হাসি, মুখের ভাঁজ, দু’আঙুলে ভিকট্রি তুলে ধরা আস্ফালন। জেলা কংগ্রেসের নিভু নিভু মুখে যেন দেশ জয়ের আলো।

Advertisement

অনল আবেদিন

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:২২
Share:

জয়-পরাজয়: দলীয় কার্যালয়ের সামনে উচ্ছ্বসিত কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকেরা। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

বিজয় মিছিলটা আকারে তেমন দীর্ঘ না হলেও শীতের বিকেলে বহমপুরের রাস্তায় হেঁটে যাওয়া মানুষগুলির মুখ অনেক কথাই যেন বলছিল। শব্দ সাজিয়ে নয়। তাঁদের হাসি, মুখের ভাঁজ, দু’আঙুলে ভিকট্রি তুলে ধরা আস্ফালন। জেলা কংগ্রেসের নিভু নিভু মুখে যেন দেশ জয়ের আলো। ভরা বাম আমলেও কংগ্রেসের রাজ্যপাট বলে পরিচিতি ছিল যে শহরটা, পালা বদলের পরেও যাদের গড়ে আঁচড় পড়েনি, গত এক বছরে সেই আত্মবিশ্বাসেই আঁকিবুঁকি ফাটল ধরতে শুরু করেছিল।

Advertisement

বিধায়ক থেকে সাংসদের ক্রমান্বয়ে দল বদলের শেষে দলের কার্যালয়ে যে ধূসর রংটা ধরে গিয়েছিল, মঙ্গলবার, দেশের তিন তাবড় রাজ্যে বিজেপি’র ঘাড়ে শ্বাস ফেলে কংগ্রেসের জয়ের পরে সেই হারানো আত্মবিশ্বাসটাই যেন ফিরে এল ফের। তার জেরেই কংগ্রেসের শহর বহরমপুরে মিছিল, কাড়া নাকাড়া, মিষ্টিমুখ। যেন, সুদূর রাজস্থান কিংবা ছত্তীসগঢ়ের কোনও অনামী জনপদ।

ছবিটা ঠিক বিপরীত সদর হাসপাতালের কাছে বিজেপি কার্যালয়ে। ঢাউস মাপের অমিত শাহের ছবির সামনে খান কয়েক এলোমেলো চেয়ারে ভাঙা মনের দু-চার জন কর্মী। যাঁদের চেহারা-চোখ-মুখে স্পষ্ট হতাশা। জেলা কংগ্রেসের এক নেতা বলছেন, ‘‘কেন হবে না বলুন, এই আবহে তিন রাজ্যে কংগ্রেসের জয় লোকসভা ভোটের আগে দলের কর্মী কাছে এক আঁজলা অক্সিজেন।’’ সদ্য-প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলছেন, ‘‘পঞ্চায়েত ও পুরসভা ভোটে তৃণমূল জবরদস্তি ভোট লুট করেছে। টাকার কাছে বিকিয়ে গিয়েছেন কয়েক জন বিধায়ক। তাই বলে তৃণমূল মুর্শিদাবাদের মানুষের মন কিন্তু কিনতে পারেনি। একই কথা বিজেপি’র ক্ষেত্রেও, জমিতে পা না রেখে স্বপ্ন দেখলে যা হয়। দেখবেন, লোকসভা ভোটে জেলার ৩টি আসনেই কংগ্রেস জিতবে।’’

Advertisement

সুনসান বিজেপির কার্যালয়। মঙ্গলবার বহরমপুরে।

দলের পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক মনোজ চক্রবর্তী সেই উল্লাস থেকে ছিটকে এসে জানিয়ে গেলেন, ‘‘তিন রাজ্যের কংগ্রেসের জয় যেন এ জেলার কংগ্রেস কর্মীদের কাছে হারানো রাজ্যপাট দখলের ইশারা।’’ তবে এত উৎসাহিত হওয়ার কোনও কারণ দেখছেন না জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। দলের ভারপ্রাপ্ত নিবার্হী সভপতি তপন চন্দ্রের কটাক্ষ, ‘‘কংগ্রেসের এই উচ্ছ্বাস দেখে অবাকই হচ্ছি। মিজোরাম হাতছাড়া হয়েছে কংগ্রেসের, আনন্দ কি সে কারনেই!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন