বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
অভিযোগ আসছিল বেশ কিছু দিন ধরে। বুধবার হাতেনাতে ধরে ফেললেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্যবস্থাও নিলেন।
বিধানসভার কমিটির পাশাপাশি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে না এসে পরে হাজিরা খাতায় সই করছেন বিধায়কেরা। ভাতাও পেয়ে যাচ্ছেন তাঁরা— এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে স্পিকার এ দিন সরেজমিন বিধানসভায় কয়েকটি কমিটির বৈঠকে ঢুঁ মারেন। দেখেন, এক একটি ঘরে বৈঠকে হাজির সরকারি আধিকারিকরা। রয়েছেন হাতে গোনা কয়েক জন বিধায়ক। কোথাও বৈঠক হচ্ছে, কোথাও আবার বাকি সদস্যদের জন্য অপেক্ষা চলছে। খোঁজ নিয়ে স্পিকার জানলেন, অনেক সদস্যই দেরি করে আসেন। পরে এসে সই করেন।
এই চিত্র দেখে অসন্তুষ্ট স্পিকার জানতে চান, বৈঠকে অংশ না নিয়েও হাজিরা-খাতায় সই করার নিয়ম আছে কি? স্পিকারের এ প্রশ্নের জবাবে সরকারি আধিকারিক জানান, নিয়ম নেই। কিন্তু এমনটাই চলছে। যা শুনেই স্পিকার নির্দেশ দেন, কমিটিগুলির বৈঠক শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যে যে বিধায়ক-সদস্যরা উপস্থিত হতে পারবেন না, তাঁদের আর হাজিরা খাতায় সই করতে দেওয়া হবে না। বৈঠক শুরুর এক ঘণ্টা পরেই প্রতিটি হাজিরা খাতা স্পিকারের কাছে জমা দিতে হবে। দেরি করে আসা বিধায়কদের স্পিকারের কাছে গিয়ে সই করার অনুমতি নিতে হবে। এ দিন কমিটির বৈঠক শুরুর নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে আসা কয়েক জন বিধায়ককে স্পিকারের অনুমতি নিয়ে সই করতে হয়েছে বলে বিধানসভা সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: নিম্নবিত্তের জন্য নয়া বাসা ‘নিজশ্রী’ আনল রাজ্য সরকার
কেন বিধায়কদের জন্য এত কড়া বার্তা দিতে হল? স্পিকার বিমানবাবুর বক্তব্য, ‘‘কমিটিগুলি ভাল ভাবে কাজ করুক, সেটাই চাই। কিন্তু কমিটির বৈঠকে সদস্যরা নেই, অথচ দিনের পর দিন বৈঠক হচ্ছে, এটা কী! যেটা হচ্ছিল, ঠিক হচ্ছিল না। বিধায়কেরা নিয়মিত হাজির থেকে বৈঠকের আলোচনায় অংশ নিন। তার জন্যই আমাকে কিছু প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।’’
রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের কাজ পর্যালোচনা এবং প্রয়োজনে সুপারিশ করাই বিধানসভার ২৬টি স্থায়ী কমিটির সদস্যদের কাজ। একই ভাবে বিধানসভা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখতে আরও ১৪টি কমিটি রয়েছে। এক এক জন বিধায়ক মাত্র একটি স্থায়ী কমিটির সদস্য হতে পারেন। কিন্তু একাধিক বিধানসভা সংক্রান্ত কমিটিতে তাঁরা থাকতে পারেন। মাসের প্রথম ১৫দিনে দু’টি কমিটির বৈঠক আর মাসের দ্বিতীয়ার্ধে দু’টি কমিটির বৈঠকে হাজির থাকলেই ৩০ হাজার টাকা বিধায়করা ভাতা হিসেবে পান। এ বার সময়মতো হাজিরা দিতে না পারলে বিধায়কদের ভাতায় ‘কোপ’ পড়তে পারে বলেও বিধানসভা সূত্রের খবর।