সানাউল্লা শেখ ওরফে ডালিম
মঙ্গলকোটের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি সানাউল্লা শেখ ওরফে ডালিম খুনের ঘটনার ৮৭ দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা দিল সিআইডি। শুক্রবার কাটোয়া আদালতে ধৃত ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা পড়ে। ঘটনায় ১৫ জনের নামে অভিযোগ হয়েছিল।
গত ১৯ জুন সন্ধ্যায় নিগন বাসস্ট্যান্ডে মাছের আড়তে বসে থাকার সময় গুলিবিদ্ধ হন তৃণমূলের শিমুলিয়া ১ পঞ্চায়েত সদস্য তথা তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি ডালিম। পরের দিন নিহতের স্ত্রী লাভলি বিবি অভিযোগ করেন, ‘‘রাজনীতিতে ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীর দীর্ঘদিনের সঙ্গী স্বামী। তাই বিধায়ক গোষ্ঠীর কয়েকজন ওঁকে সরিয়ে দিল।’’ বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর ভাই রহমতুল্লা চৌধুরী ও জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ বিকাশ চৌধুরী-সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগও দায়ের করেন ডালিমের ভাই আসাদুল্লা শেখ। তৃণমূল নেতারা তো বটেই মুখ্যমন্ত্রীও জেলা সফরে এসে দোষীদের ধরার কথা বলেন।
এ দিন কাটোয়া আদালতের তৃতীয় জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুচিত্রা দেবের এজলাসে এখনও পর্যন্ত ধৃত ১৮ জনের বিরুদ্ধে ৮৫৮ পাতার চার্জশিট পেশ করে সিআইডি। তা ছাড়াও মূল অভিযুক্ত বিকাশ ও রহমতুল্লা-সহ সাত জনের নাম চার্জশিটে ‘পলাতক’ হিসাবে রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে বলেও লেখা রয়েছে। লাভলি বিবি এ দিন বলেন, ‘‘দিদির উপর আস্থা রয়েছে। সিআইডি যা তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে তা মেনে নিয়েছি।’’ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী বলেন, ‘‘সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে বিকাশ, রহমতুল্লার নাম থাকবে বলে আশা করছি।’’
১ জুলাই ওই ঘটনার তদন্তভার নেয় সিআইডি। মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফরে এসে দোষীদের শাস্তির কথা বলার পরেই পূর্বস্থলীর খড়দত্তপাড়া থেকে মোসাম্মদ শেখ ও কাটোয়ার নতুনগ্রাম থেকে কবীর হোসেনকে ধরা হয়। গোয়েন্দারা দাবি করেন, তিন মাস আগেই খুনের ‘ব্লু প্রিন্ট’ তৈরি করে দুষ্কৃতীরা। শিমুলিয়ার তিন বাসিন্দা রাজু শেখ, বাবর শেখ ও ডাবলু শেখ ছ’লক্ষ টাকার বিনিময়ে কবীরকে খুনের বরাত দেয়। সে আবার গড়াগাছা, খড়দত্তপাড়া ও মন্তেশ্বরের ছ’জনকে খুনের বরাত দেয়। জানা যায়, খুনের বরাত দেওয়ার সঙ্গে সে অস্ত্রও সরবরাহ করেছিল মোসাম্মদকে। কবীরের সঙ্গে প্রভাবশালী কোনও নেতার যোগ আছে বলেও তদন্তে জানতে পারে পুলিশ।
এ দিন সিআইডির তদন্তকারী অফিসার শ্যামল শিকদার জানান, ১৮ জনকে ধরা হয়েছে। সাত জনের বিরুদ্ধে এখনও তদন্ত চলছে।