খেতে গিয়ে শ্বাসনালিতে আটকে যায় প্রায় আড়াই ইঞ্চি লম্বা মাংসের হাড়। কালিয়াচকের যুবক সাদ্দাম হোসেনের গলা থেকে সেই মাংসের হাড় নিপুণ অস্ত্রোপচার করে বের করলেন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। চিকিৎসকদের এমন উদ্যোগে খুশি সাদ্দামের পরিবার সহ অন্য রোগীরা। হাসপাতালের নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মহম্মদ আব্দুর রশিদ বলেন, “হাড়ের দু’দিকই খুব ধারালো থাকায় শ্বাসনালী ফুটো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। হাড়টি বেশিক্ষণ আটকে থাকলে বড় অঘটনও ঘটতে পারত। আমরা সেই হাড় বের করেছি।” এখন ওই রোগীর অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কালিয়াচক থানার পঞ্চানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বনকুল গ্রামের বাসিন্দা সাদ্দাম পেশায় গাড়ি চালক। তাঁর দুই ছেলে মেয়ে। শনিবার রাত ন’টা নাগাদ ছেলে-মেয়েদের নিয়ে খেতে বসেছিলেন তিনি। মুর্গির মাংস দিয়ে চলছিল খাওয়া দেওয়া।
সকলে এক সঙ্গে খেতে বসায় চলছিল গল্প। আচমকা একটি মাংসের হাড় ভাতের সঙ্গে খেয়ে ফেলেন সাদ্দাম। তারপরই শুরু হয়ে যায় বাড়িতে হইচই। পরিবারের লোকেরা তাঁকে প্রথমে নিয়ে যান বাঙিটোলা গ্রামীণ হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা তাঁকে স্থানান্তরিত করে দেন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। তারপরেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মহম্মদ আব্দুর রশিদের নেতৃত্বে গঠিত হয় চার সদস্যের মেডিক্যাল টিম। প্রথমে ছবি তোলা হয়। তারপরেই তাঁকে অচৈতন্য করে প্রায় ২০ মিনিট ধরে চলে অস্ত্রোপচার।
সাদ্দাম বলেন, “হাড়টি গলায় আটকে যাওয়া মাত্র আমার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল দম বেরিয়ে যাবে। চিকিৎসকদের জন্য কার্যত এ যাত্রায় রক্ষা পেলাম।” চিকিৎসক আব্দুর রশিদ বলেন, “ফোন কিংবা গল্প করতে করতে খাওয়া থেকে মানুষকে সচেতন হতে হবে।”
সম্প্রতি, কালিয়াচকেরই বাসিন্দা দুই শিশুর মধ্যে একজনের গলায় লকেট এবং অপর জনের গলায় কইমাছ আটকে গিয়েছিল।
সেই দুই ঘটনাতেও সাফল্য পেয়েছিলেন মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকেরা। ডেপুটি সুপার জ্যোতিষচন্দ্র দাস বলেন, “বিশেষজ্ঞ চিকিৎসদের চেষ্টায় জটিল অস্ত্রোপচারে আমরা সাফল্য পাচ্ছি। রোগীদের সুচিকিৎসা পরিষেবা দিতে পেরে আমরা খুশি।”