Arjun Singh Kunal Ghosh

শ্যাম-অর্জুন বিবাদে কুণাল নিশানা করলেন অর্জুনকে, বললেন, প্রায়শ্চিত্ত করুন! তার পর বড় বড় কথা হবে

বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম সম্পর্কে বুধবার সাংসদ অর্জুন সিংহ বলেছেন, ‘‘পাশ থেকে পুলিশের নিরাপত্তা উঠে গেলে বাড়ি থেকে বের হওয়া বন্ধ হয়ে যাবে!’’ তবে কুণালের মন্তব্য নিয়ে নীরবই রইলেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:৩০
Share:

(বাঁ দিকে) অর্জুন সিংহ। কুণাল ঘোষ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

সোমবার তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে বিতর্ক আবর্তিত হয়েছিল তাঁকে ঘিরে। মঙ্গলবার তিনি কিছুটা ঐক্যের কথা বলেছিলেন। সেই তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বুধবার ফের ‘স্বমহিমায়’। ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহের সঙ্গে জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের দ্বন্দ্বে কুণাল নিশানা করলেন অর্জুনকেই। যা তৃণমূলের অন্দরে সাম্প্রতিক বিতর্কে নতুন সংযোজন।

Advertisement

বুধবার কুণাল গিয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরে। সেখানেই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘কোনটা দলের ভাল, কোনটা দলের বিরুদ্ধে যাচ্ছে, এ সব না জেনে অর্জুনবাবুকে ভাবতে হবে না। দলের ব্যাপার দলকে বুঝতে দিন! আগে নিজের এলাকা সামলান। পরে দলের কথা ভাববেন।’’ ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন অর্জুন। তার ২৯ দিনের মধ্যে নির্বাচনে জিতেওছিলেন তিনি। তার পরে ২০২২-এর অগস্টে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে গিয়ে তৃণমূলে ফিরেছিলেন ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের এই নেতা। বুধবার সেই প্রসঙ্গ তুলে কুণাল বলেছেন, ‘‘যখন দলের প্রতি এত যখন দরদ, তখন ছেড়ে গিয়েছিলেন কেন? আগে প্রায়শ্চিত্ত করুন! অত বড় বড় কথা বলবেন না।’’

যদিও কুণালের বক্তব্য নিয়ে অর্জুন কোনও কথা বলতে চাননি। তবে সোমনাথ সম্পর্কে ব্যারাকপুরের সাংসদ বলেছেন, ‘‘পাশ থেকে পুলিশের নিরাপত্তা উঠে গেলে বাড়ি থেকে বের হওয়া বন্ধ হয়ে যাবে!’’ বস্তুত, অর্জুন এ-ও বলেন, ‘‘আমি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করব, ওঁর (সোমনাথের) নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হোক।’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, মুকুল রায় যে দিন তৃণমূলে ফিরেছিলেন, সে দিন পুরনো তৃণমূল ভবনে স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি মানদণ্ডের কথা বলেছিলেন। মমতা বলেছিলেন, ‘‘যাঁরা তৃণমূল থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কেউ চরমপন্থী রয়েছেন, কেউ নরমপন্থী। চরমপন্থীদের আমরা নেব না।’’ সেই সঙ্গে এ-ও বলেছিলেন, ‘‘মুকুল যতই বিজেপি করুক, ও কিন্তু ইলেকশনের সময়ে আমাদের নামে একটাও খারাপ কথা বলেনি।’’ তার পর একে একে অনেকেই শাসকদলে ফিরেছেন। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসাবে অভিষেক যাঁদেরই দলে নিতেন, তাঁদের ব্যাপারে বলতেন, ‘‘প্রায়শ্চিত্ত করিয়ে নেওয়া হবে।’’ রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রেও ওই কথা বলতে শোনা গিয়েছিল অভিষেককে। বুধবার কুণালের কথাতেও ‘সেনাপতি’র সেই সুরই শোনা গিয়েছে।

ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের রাজনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহালেরা গত কয়েক দিন ধরেই বলছেন, সোমনাথ শ্যাম যে ভাবে অর্জুনকে নিশানা করছেন, নিশ্চয়ই তাঁর মাথায় ‘বড়’ কারও হাত রয়েছে। না হলে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর ডাকা মীমাংসা বৈঠক তিনি এড়িয়ে যেতে পারতেন না। বুধবার কুণাল যে ভাবে অর্জুনকে নিশানা করে পরোক্ষে সোমনাথের পাশে দাঁড়ালেন, তাতে সেই ধারণা আরও দৃঢ় হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন