উদ্বোধনের আগেই টাকার দাবিতে হামলা হল জলপাইগুড়ির একটি গাড়ির শোরুমে। এখানকার কর্মী-আধিকারিকদের বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। কিন্তু স্থানীয় পুলিশ প্রথমে না এগোলেও পরবর্তীতে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের সরাসরি হস্তক্ষেপে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হল জেলা প্রশাসন।
জানা গিয়েছে খুব দ্রুত এই ঘটনার খবর পৌঁছে যায় মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে। তারপরেই নবান্ন থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে নির্দেশ আসে, শোরুম বন্ধ করতে দেওয়া যাবে না। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। এরপরেই নড়েচড়ে বসে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। শোরুমের সামনে পুলিশের পাহারা বসে। তদন্ত শুরু করে পুলিশ। রাতে সংস্থার তরফে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় ৭ জনের নামে লিখিত অভিযোগ করা হয়। এদের মধ্যে তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যের নাম রয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’ জলপাইগুড়ির শিরীষ তলায় দীর্ঘদিন ধরেই একটি গাড়ি সংস্থার বিশাল শোরুম তৈরির কাজ চলছিল। শনিবার উদ্বোধনের আগে লক্ষাধিক টাকা দাবি করা হয়। শোরুমের জেনারেল ম্যানেজার গোপাল দেব বলেন, ‘‘সকালে উদ্বোধনের আগে কিছু লোক এসে ঝামেলা শুরু করে। কী হয়েছে জানতে চাইলে আমাদের উপর চড়াও হয়।’’ শোরুমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অনুপ পোদ্দার বলেন, ‘‘টাকা না দিয়ে উদ্বোধন করা যাবে না বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।’’ সে সময় খোদ তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান সেখানে ছিলেন বলে অভিযোগ।
তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা অবশ্য দাবি করেছেন একটি কালভার্ট তৈরি নিয়ে বিবাদ হয়েছিল। অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মৌ সূত্রধর বলেন, ‘‘কালভার্ট তৈরি করে দেওয়ার কথা ছিল সংস্থাটির। সে কাজ দেরি হওয়ায় লোকেরা আপত্তি তুলেছিলেন। সে সময় আমি গিয়েছিলাম। কোনও টাকা আদায়ের বিষয় নেই।’’
রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষস্তরে অভিযোগ পৌঁছনোয় বেকায়দায় জেলা তৃণমূল নেতারা। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শিরীষতলায় যা হয়েছে তা কাম্য নয়। দলের কেউ এর সঙ্গে যুক্ত নন। স্থানীয় কোনও বিবাদ হতে পারে, সে কারণেই পঞ্চায়েত প্রধান গিয়েছিল বলে মনে হচ্ছে।’’
চাপে পড়ে ঘটনাটি তৃণমূল আড়াল করতে চাইছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ।