ফাঁকের গেরোয় বাড়ছে রেল দুর্ঘটনা, নিরুত্তাপ কর্তৃপক্ষ

প্রতিদিনই বিভিন্ন স্টেশনে বিশেষ করে মহিলা যাত্রীরা ট্রেনে উঠতে গিয়ে পড়েও যাচ্ছেন। কিন্তু এই নিয়ে কোনও হেলদোল নেই রেলের।

Advertisement

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৪৯
Share:

বালিগঞ্জ স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম আর ট্রেনের পাদানির ব্যবধান এতটাই। ফাইল চিত্র

পরিকাঠামো ঠিক করতে সর্বত্র রেললাইনে কাজ চলছে। গোটা দেশের মতো সেই কাজে হাত লাগিয়েছে পূর্ব রেলও। কিন্তু ওই কাজের জেরে রেললাইন আরও উঁচু হয়ে যাওয়ায় প্ল্যাটফর্ম থেকে ট্রেনের উচ্চতা বেড়ে গিয়েছে। ফলে এখন ট্রেনে ওঠাই দায় হয়েছে যাত্রীদের। প্রতিদিনই বিভিন্ন স্টেশনে বিশেষ করে মহিলা যাত্রীরা ট্রেনে উঠতে গিয়ে পড়েও যাচ্ছেন। কিন্তু এই নিয়ে কোনও হেলদোল নেই রেলের।

Advertisement

এমনিতেই শিয়ালদহ মেনলাইন-সহ বনগাঁ, ডানকুনি এবং শিয়ালদহ দক্ষিণের বেশ কিছু স্টেশনে অনেক আগে থেকেই ট্রেনের চেয়ে প্ল্যাটফর্ম নিচু ছিল। অনেক দিন ধরেই যাত্রীরা বিষয়টি নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করছিলেন। কিন্তু শিয়ালদহ ডিভিশনের কর্তারা বিষয়টি বারবার এড়িয়ে গিয়েছেন। এ বার লাইনে কাজ শুরু হওয়ার পরে প্ল্যাটফর্ম ও ট্রেনের উচ্চতার মধ্যে ফারাক এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে, ট্রেনে ওঠা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দমদম, ব্যারাকপুর, বেলঘরিয়া শ্যামনগর থেকে শুরু করে কল্যাণী পর্যন্ত বেশ কয়েকটি স্টেশনে এমনই অবস্থা। একই হাল শিয়ালদহ দক্ষিণের বালিগঞ্জ থেকে ডায়মন্ড হারবার, লক্ষ্মীকান্তপুর শাখার বিভিন্ন স্টেশনে। যাত্রী অ্যাসোসিয়েশনের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, বারবার বলা সত্ত্বেও রেলকর্তারা বিষয়টি দেখছেন না।’’ তাঁদের আরও অভিযোগ, ট্রেন এবং প্ল্যাটফর্মের মধ্যে ফাঁক বেড়ে যাওয়ায় ইতিমধ্যে দু’-তিনটি দুর্ঘটনাও ঘটেছে। ট্রেনে উঠতে গিয়ে ওই ফাঁক দিয়ে যাত্রীরা গলে লাইনে পড়ে ট্রেনের চাকায় কাটাও পড়েছেন। তবুও কোনও হেলদোল নেই রেল কর্তৃপক্ষের।

Advertisement

রেল সূত্রের খবর, প্ল্যাটফর্ম এবং ট্রেনের মধ্যে ব্যবধান হওয়ার কথা মেরেকেটে ৭ ইঞ্চি। কিন্তু লাইন উঁচু করে দেওয়ায় বিভিন্ন স্টেশনে ওই উচ্চতা হয়েছে দু’ফুটের কাছাকাছি। অভিযোগ, পুরুষ যাত্রীদেরই ট্রেনে উঠতে কষ্ট হচ্ছে। সেখানে মহিলারা শাড়ি পরে অতটা উঁচুতে পা তুলে উঠতে আরওই সমস্যায় পড়ছেন।

রেল কর্তারা অবশ্য অভিযোগ পেয়ে আশ্বাস দিয়েছেন যে, ঠিক করে দেওয়া হবে। কিন্তু যাত্রীদের এই অভিযোগ জানাতে হবে কেন? রেললাইন মেরামতি করা হলে এই বিষয়টিও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দেখার কথা। তাঁরা কেন বিষয়টি দেখভাল করছেন না, সে সব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রেলেরই একাংশ। এর জবাব অবশ্য রেলকর্তারা দিতে পারেননি। তবে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, ‘‘বরাদ্দ টাকা না আসায় কাজ করা যাচ্ছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন