প্লাস্টিকের বিকল্প জৈব প্লাস্টিক

মঙ্গলবার আবার হাজির বিশ্ব পরিবেশ দিবস। রাষ্ট্রপুঞ্জ এ বছর থিম হিসেবে প্লাস্টিক-দূষণকেই বেছে নিয়েছে। মূল অনুষ্ঠানের আয়োজক দেশ ভারত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৮ ০৪:০৮
Share:

পরিবেশ দিবস আসে এবং চলেও যায়। প্লাস্টিক-দূষণের সুরাহা হয় কি?

Advertisement

এই প্রশ্নের মধ্যেই আজ, মঙ্গলবার আবার হাজির বিশ্ব পরিবেশ দিবস। রাষ্ট্রপুঞ্জ এ বছর থিম হিসেবে প্লাস্টিক-দূষণকেই বেছে নিয়েছে। মূল অনুষ্ঠানের আয়োজক দেশ ভারত। ক্রমবর্ধমান প্লাস্টিক-দূষণের মধ্যেই মুশকিল আসানের খুব ক্ষীণ একটা আলো যেন আসি-আসি করছে! সেটা হল বায়োপ্লাস্টিক বা জৈব প্লাস্টিক। তাতে দূষণের কোনও আশঙ্কা নেই। অর্থাৎ শত্রু প্লাস্টিকের বদলে মিত্র জৈব প্লাস্টিক। তবে তাতে খরচ বেশি।

কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ছবিটা কী?

Advertisement

রাজ্যের দোকানে দোকানে পাতলা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ছড়াছ়়ড়ি। অথচ সেগুলির কোনওটিই বৈধ কারখানায় তৈরি হয় না! সোমবার জাতীয় ক্ষুদ্র শিল্প নিগম এবং বণিকসভা বেঙ্গল ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের যৌথ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের শেষে এ কথাই জানালেন রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র। তিনি বলেন, ‘‘এমন কোনও কারখানাকে আমরা ছাড়পত্র দিইনি। বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ ভাবে এবং লুকিয়েই এই ধরনের ব্যাগ তৈরি হচ্ছে।’’

পরিবেশকর্মীরা বলছেন, ৫০ মাইক্রনের থেকে পাতলা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ তো চোরাবাজারে বিক্রি হয় না। তবু তা আটকানো যাচ্ছে না কেন? কল্যাণবাবুর জবাব, ‘‘আমরা নিয়ন্ত্রক সংস্থা। জরিমানা, ধরপাকড়ের ক্ষমতা আমাদের নেই।’’ পরিবেশ দফতরের এক শীর্ষ কর্তার মন্তব্য, ‘‘কারখানা বন্ধ করতে গেলে নানা সমস্যা থাকে। ক্রেতারা নিতে না-চাইলে উৎপাদন বন্ধ হবে, এই আশায় আছি।’’

পরিবেশবিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী জানান, ২০১৭ সালের প্লাস্টিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রতি বছর ভারতে এক কোটি ২৮ লক্ষ টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয়। বিশ্বে বিভিন্ন সাগর ও মহাসাগরে ৮০০ কোটি টন প্লাস্টিক ভেসে বেড়াচ্ছে এবং এই প্লাস্টিকের দূষণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্থল ও জলের জীববৈচিত্র। তাইল্যান্ডে ‘পাইলট’ প্রজাতির একটি মৃত তিমির পেটে কয়েক কিলোগ্রাম প্লাস্টিক মিলেছে।

পরিবেশবিদেরা জানাচ্ছেন, এই যুগে প্লাস্টিকহীন হিসেবে থাকা সম্ভব নয়। এক বার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকই পরিবেশে সমস্যা তৈরি করছে। এই বিপদ থেকে বাঁচতে উন্নততর প্লাস্টিক তৈরি করা দরকার। স্বাতীদেবী জানান, দূষণ সৃষ্টিকারী প্লাস্টিকের বদলে ‘বায়োপ্লাস্টিক’ বা জৈব প্লাস্টিক তৈরি হয়েছে। এই প্লাস্টিকে জৈব উপাদান থাকে। তাই তা দূষণ ছড়ায় না। তবে এই প্লাস্টিক তৈরির খরচ বেশি, বাজারেও সে-ভাবে মেলে না। পরিবেশ বাঁচাতে এই ধরনের গবেষণা প্রয়োজন, যাতে কম খরচে বাজারে এই প্লাস্টিক আনা যেতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন