বিকোচ্ছে ‘মরা’ মুরগি, দাবি বাদুড়িয়া পুরসভার

অভিযোগ উঠেছে, গত কয়েক মাস ধরে আনারপুর, মাথাভাঙা, তারাগুনিয়া-সহ বিভিন্ন এলাকার কিছু ব্যবসায়ী ওই সব পোলট্রি থেকে সন্ধ্যার পর ‘মরা’ মুরগি কিনছে।

Advertisement

নির্মল বসু

বাদুড়িয়া শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭ ০৪:১৮
Share:

এই অভিযোগপত্র পুলিশকে দিয়েছেন তনয়বাবু।

এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী নানা পোলট্রি থেকে মরা মুরগি কিনে শহর ও শহরতলির রেস্তোরাঁয় চালান দিচ্ছেন বলে পুলিশে অভিযোগ করেছেন বাদুড়িয়া পুরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর তনয়কান্তি রায়। কিন্তু এ নিয়ে বাদুড়িয়া পুরসভার সঙ্গে চাপানউতোর শুরু হয়েছে পুলিশের।

Advertisement

পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাদুড়িয়ায় ১০-১২ হাজার পোলট্রি রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, গত কয়েক মাস ধরে আনারপুর, মাথাভাঙা, তারাগুনিয়া-সহ বিভিন্ন এলাকার কিছু ব্যবসায়ী ওই সব পোলট্রি থেকে সন্ধ্যার পর ‘মরা’ মুরগি কিনছে। তার পরে ‘ফর্মালিন’ দিয়ে থার্মোকলের বাক্সে ভরে গভীর রাতে লরি করে সেই মুরগি পাঠাচ্ছে কলকাতা, বসিরহাট-সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার হোটেল, বাজার কিংবা রেস্তোরাঁয়। পুলিশের কাছে অভিযোগপত্রে সেই কথাই লিখেছেন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর তনয়বাবু। স্থানীয়দের কাছ থেকে তিনি কয়েক জনের নামও পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

বিপজ্জনক এই কারবার চালানোর অভিযোগ নিয়ে আগেই সরব হয়েছিল বাদুড়িয়ার কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং সাধারণ মানুষ। কিন্তু পুলিশের দাবি, তাদের কিছু করার নেই। বিষয়টি খাদ্য দফতর কিংবা পুরসভার দেখার কথা। পুলিশের এই গা-ছাড়া মনোভাবে বিরক্ত পুরপ্রধান তুষার সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘কোনও ভাবেই মরা মুরগির ব্যবসা চলতে দেওয়া যায় না। বলা সত্ত্বেও পুলিশ কাজ না-করলে তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। বাতিল করা হবে ট্রেড লাইসেন্স।’’

Advertisement

বিভিন্ন পোলট্রির মালিকেরাও মানছেন, মরা মুরগি বা মুরগির দেহাংশ— কিছুই পড়ে থাকে না। সব বিক্রি হয়ে যায়। এমনকী ‘মরা’ মুরগি মাত্র ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়ে যায় বলেও কারও কারও দাবি। তনয়বাবুর কথায়, ‘‘বিভিন্ন এলাকার লোকজন মরা মুরগির ব্যবসা নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এক শ্রেণির ব্যবসায়ী বেশি লাভের আশায় মরা মুরগি হোটেলে সরবরাহ করছেন। অবিলম্বে এই ব্যবসা বন্ধের জন্য পুরসভার পক্ষেও সব রকম আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’

একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যা কল্পনা সরকারের সন্দেহ, কম দামে ওই মুরগি মিলছে বলেই হোটেলে ৬০-৭০ টাকায় চিকেন বিরিয়ানি পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয় আরও একটি স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য সঞ্জয় মণ্ডল বলেন, ‘‘কত মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়বেন! ফর্মালিন তো মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন