রাত পোহালে বন্ধের বয়স হবে একশো দিন। পাহাড়ের মানুষের ঘরে ঘরে ভাঁড়ার প্রায় খালি। দোকানপাট বন্ধ, রোজগারও নেই। পড়াশোনা লাটে উঠেছে। পুজো আসতে আর মাত্র কয়েক দিন। কিন্তু পাহাড় স্বাভাবিক হবে কবে, কারও কাছে তার জবাব নেই। বন্ধের সেঞ্চুরির মুখে এই পরিস্থিতিতে হাঁফিয়ে উঠেছেন পাহাড়বাসী।
আলোচনাপন্থীরা দোকানবাজার খুলতে ভরসা জুগিয়ে যাচ্ছেন সমানে। শুক্রবারও কার্শিয়াঙে অনীত থাপার অনুগামীরা রাস্তায় নেমে হকার, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কালিম্পঙেও জন আন্দোলন পার্টির নেতা হরকাবাহাদুর ছেত্রী ছোট ছোট সভা করে নিয়মিত জনজীবন স্বাভাবিক করার চেষ্টা জোরদার করেছেন। দার্জিলিঙে কেউ কেউ নিজেরাই আনাজ বেচছেন। ঝুঁকি থাকলেও অনেকে পুজোর মুখে হাতে দুটো টাকা যাতে আসে, সেই আশায় গাড়ি বের করে শিলিগুড়ি-দার্জিলিং, কালিম্পং, মিরিক রুটে ভাড়া খাটতে শুরু করেছেন। বিনয় তামাঙ্গ লোক পাঠিয়ে ম্যাল-চৌরাস্তায় চাওয়ালা, বাদাম বিক্রেতাদের অভয় দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: বিনয়ের বোর্ডকে বিপুল বরাদ্দ
মোর্চার কট্টরপন্থীরা কিছুটা বিভ্রান্ত। আলোচনাপন্থীরা যখন প্রচার করছেন, কোন নেতার ছেলে বিদেশে সিনেমা বানান বা কে ভিনরাজ্যের রিসর্টে বসে ভিডিও ফুটেজ বানাচ্ছেন, জবাবে কট্টরপন্থীরা তখন চকবাজারে দাঁড়িয়ে চেঁচিয়েই বলছেন, কার্শিয়াঙের কোন নেতা ইলমে চা বাগান কিনেছেন। কোন নেতা দু’টি স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও তৃতীয় বিয়ে করেছেন!
তরজার মাঝে পাহাড়ের মানুষের আশা, বন্ধের মেয়াদ হয়তো বা ফুরিয়ে এল। শিলিগুড়িতে নেমে এসেছেন দীপক লামা, রমেশ ছেত্রীরা। দীপক বললেন, ‘‘বন্ধের ডাক দিয়ে নেতা হাওয়া হয়ে গেলে চলবে কী করে!’’ রমেশ ছেত্রীও ভীষণ বিরক্ত। আনাজ বিক্রেতা সোনম রাই, লীলা বিশ্বকর্মা বললেন, ‘‘আমরা পেটে কিল মেরে আন্দোলন করছি। অথচ শুনছি কয়েক জন নেতা নাকি পয়সা কামাচ্ছেন!’’