আন্দোলনের রং নিয়ে দু’ভাগ দাড়িভিট

যে দাড়িভিটার বাসিন্দা রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মণের মৃত্যুতে বুধবারের বন্‌ধ ডাকা হয়েছিল, তাকে কিন্তু সফলই করেছেন এই গ্রামের বাসিন্দারা। স্বাভাবিক জনজীবন ছিল স্তব্ধ।

Advertisement

শুভঙ্কর চক্রবর্তী

দাড়িভিট (ইসলামপুর) শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৫৫
Share:

—ফাইল চিত্র।

গ্রামের দুই তরতাজা তরুণ দিনেদুপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন। সেই ঘটনার প্রতিবাদে ডাকা বিজেপির বন্‌ধে দু’ভাগ হয়ে গেলেন দাড়িভিটের মানুষ। এক দলের বক্তব্য, প্রতিবাদ হোক অরাজনৈতিক। সেখানে কোনও দলের পতাকা ব্যবহার করা চলবে না। অন্য অংশ, বিশেষ করে স্থানীয় বিজেপির নেতা-কর্মীরা নিজেদের পতাকা হাতেই আন্দোলন চালিয়ে যেতে চান।

Advertisement

যে দাড়িভিটার বাসিন্দা রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মণের মৃত্যুতে বুধবারের বন্‌ধ ডাকা হয়েছিল, তাকে কিন্তু সফলই করেছেন এই গ্রামের বাসিন্দারা। স্বাভাবিক জনজীবন ছিল স্তব্ধ। ইসলামপুর-সোনামতি রাজ্য সড়ক দু’জায়গায় বাঁশ দিয়ে আটকে দেন বিজেপি সমর্থকেরা। এরই মধ্যে সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ দাড়িভিট হাইস্কুলের কয়েক জন শিক্ষক মোটরবাইক নিয়ে স্কুলে ঢোকার চেষ্টা করলে আন্দোলনকারীরা তাঁদের তাড়া করেন। ভয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান শিক্ষকরা। এর পরেই উত্তেজিত হয়ে ওঠেন আন্দোলনকারীরা। রাস্তার উপর টায়ার রেখে তাতে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

বেলা বাড়ায় বিক্ষোভকারীদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে তির-ধনুক হাতে কিছু আদিবাসীও বিক্ষোভে যোগ দেন। বাড়ির সামনে বিক্ষোভ চলছে দেখে তাপসের মা মঞ্জু বর্মণ বেরিয়ে আসেন। ছিল তাপসের বোনও।

Advertisement

আন্দোলনকারীদের মধ্যে এর ভিতরেই মতভেদ দেখা দেয়। দাড়িভিট বাজারের ব্যবসায়ী নিরঞ্জন কর্মকার বলেন, ‘‘আমরা রাজেশ ও তাপসের হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তি চাই। তবে কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা হাতে নিয়ে নয়।’’

এলাকার বিজেপি নেতা মাধব সরকার বলেন, ‘‘বিজেপি বন্‌ধ ডেকেছে। তাই বিজেপির পতাকা থাকবে। কেউ কেউ নিজস্ব স্বার্থে আন্দোলনে ফাটল ধরাচ্ছে।’’ তাপসের মা মঞ্জুদেবী বলেন, ‘‘কারও আন্দোলন নিয়ে আমাদের ছুঁৎমার্গ নেই। আমরা ন্যায় বিচার চাই।’’ রাজেশের বাবা দুলাল সরকারের বক্তব্য, ‘‘ছেলের মৃত্যুর প্রতিবাদে আন্দোলন হচ্ছে। তাই তাকে সমর্থন করি।’’ সূত্রের খবর, স্কুলে গণ্ডগোলের পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন অভিযোগে ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে তাপস মজুমদার নামে দাড়িভিট হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্র, তার কাকা প্রকাশ মজুমদার এবং স্থানীয় সিপিএম নেতা নিখিল সিকদারও আছেন। তাঁদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিও তুলেছেন আন্দোলনকারীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন