ফরাজীকান্দায় অভিযানে পাকড়াও সাজিদের ভাই

খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডে ধৃত সাজিদ ওরফে মাসুদ রানার ভাই মনোয়ার হোসেন ওরফে মনাকে গ্রেফতার করল বাংলাদেশের গোয়েন্দা দফতর। সাজিদের অপকর্মে মনার প্রচ্ছন্ন সহায়তা ছিল বলে আজ দাবি করেন ফরাজীকান্দা গ্রামের বাসিন্দারা। গত কাল ফরাজীকান্দায় জানা যায়, খাগড়াগড় কাণ্ডে ধৃত সাজিদই এই গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ রানা ওরফে মাসুম। তার ভাই মনা জানান, বাবার মৃত্যুর পরে ৪ ভাই, ৪ বোনের সংসারে সব চেয়ে ছোট মাসুমকে ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হয়।

Advertisement

কুদ্দুস আফ্রাদ

ঢাকা শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:১৪
Share:

খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডে ধৃত সাজিদ ওরফে মাসুদ রানার ভাই মনোয়ার হোসেন ওরফে মনাকে গ্রেফতার করল বাংলাদেশের গোয়েন্দা দফতর। সাজিদের অপকর্মে মনার প্রচ্ছন্ন সহায়তা ছিল বলে আজ দাবি করেন ফরাজীকান্দা গ্রামের বাসিন্দারা।

Advertisement

গত কাল ফরাজীকান্দায় জানা যায়, খাগড়াগড় কাণ্ডে ধৃত সাজিদই এই গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ রানা ওরফে মাসুম। তার ভাই মনা জানান, বাবার মৃত্যুর পরে ৪ ভাই, ৪ বোনের সংসারে সব চেয়ে ছোট মাসুমকে ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হয়। কিন্তু জঙ্গি সংগঠনের পাল্লায় পড়ে সে বিপথে চলে যায়। আজ বাংলাদেশের গোয়েন্দা দফতর বছর পঁয়তাল্লিশের মনাকেই হেফাজতে নেওয়ায় চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। এই বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের পুলিশকে অন্ধকারে রেখেছেন ঢাকার গোয়েন্দাকর্তারা। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, মনা সম্পর্কে কিছু অভিযোগ পাওয়ায় তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

ফরাজীকান্দায় খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, এই ঘটনার পরে মাসুমের পরিবারের অন্য সদস্যেরা আত্মগোপন করেছেন। ফরাজীকান্দায় তাদের পৈতৃক বাড়িতে এখন কেবল রয়েছেন শেফালি ও রোকেয়া নামে দুই মহিলা। শেফালি মনার স্ত্রী। ভারতে বুরহান শেখের নামে পরিচয়পত্র তৈরি করিয়েছিল মাসুম। গত কালই মনা জানিয়েছিলেন, বুরহান তাঁদের আর এক ভাইয়ের নাম। তিনি মালয়েশিয়ায় চাকরি করেন। আজ জানা যায়, বুরহান মালয়েশিয়া থেকে ফিরেছেন। মনা গ্রেফতার হওয়ার পরে পরিবারের বাকিদের নিয়ে তিনি গা-ঢাকা দেন।

Advertisement

ফরাজীকান্দার বাসিন্দাদের দাবি, মাসুম যে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত তা তাঁরা জানতেন। তবে সে যে এত বড় জঙ্গি নেতা তা তাঁদের জানা ছিল না। তাঁদের দাবি, মাসুমের কাজকর্মে মনাও মদত দিতেন। ১৯৯৭-এ চট্টগ্রামে প্রচুর বিস্ফোরক, ডিটোনেটর, জেহাদি বই-সহ গ্রেফতার হয় মাসুম। তখন মনাই তাকে জামিনে ছাড়ান। পরে অবৈধ অস্ত্র-সহ গ্রেফতার হয় মাসুম। তখন পৈতৃক জমি বিক্রি করে ফের তার জামিনের ব্যবস্থা করেন মনা। শেষ পর্যন্ত মাসুম দুবাই যাওয়ার কথা বলে বাড়ি ছাড়ে। তার পরে আর তার খোঁজ মেলেনি। মাসুমের আর এক ভাই মামুন স্কুলশিক্ষক। তিনি জানান, এক সময়ে ফরাজীকান্দার বাড়িতে মাসুমের কাছে বিভিন্ন অপরিচিত লোক যাতায়াত করত। এক সময়ে মাসুমের সন্দেহজনক চলাফেরায় বাধা দেন স্থানীয়েরা। পাশের গ্রাম মাধবপাশায় গিয়ে ওই অপরিচিতদের সঙ্গে বৈঠক করত মাসুম। তাদের জন্য মাসুমের বাড়ি থেকে খাবার পাঠানো হতো।

স্থানীয়রা জানান, জামাতুল মুজাহিদিনের শীর্ষ নেতা সালাউদ্দিন, হুজি-র বাংলাদেশ অপারেশনসের কম্যান্ডার খয়রুল বাশার ও মাসুম-প্রত্যেকে নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলার বাসিন্দা। ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করে হুজির জঙ্গি মওলানা রফিক আহমেদ ও ওমর ওরফে ফয়জুল ওরফে রবিকে। তাঁদের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের বক্তাবলী এলাকায়। গোয়েন্দাদে র দাবি, বক্তাবলীর এক ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ছিলেন মওলানা। রবি ছিলেন ওই এলাকায় জঙ্গিদের বোমা তৈরির কেন্দ্রের প্রধান। স্থানীয়দের আশঙ্কা, নারায়ণগঞ্জ মৌলবাদী জঙ্গিদের ঘাঁটি হয়ে উঠছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন