—প্রতীকী চিত্র।
জেলায় জেলায় বদল আনা হচ্ছে পুর প্রশাসনে। কোথাও চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান, কোথাও আবার দুই পদেই আনা হচ্ছে ‘নতুন’ মুখ। বৃহস্পতিবার একাধিক জায়গায় পুরপ্রধান এবং উপ-পুরপ্রধান পদে রদবদলের পর শুক্রবার তা হল উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতেও। সেখানে ইস্তফা দিলেন পুরপ্রধান।
তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, গত লোকসভা ভোটে বারাসত পুরসভায় বিজেপির থেকে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। এই মাপকাঠিতে যে পুরপ্রশাসনে যে বদল আনা হতে পারে, সেই ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে শহুরে ভোটে ফেরাতেই শাসকদলের অন্দরে সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
যদিও এই পদত্যাগ ব্যক্তিগত কারণে বলেই দাবি তৃণমূলের। বারাসতের পুরপ্রধান অশনি মুখোপাধ্যায় উপ-পুরপ্রধান তাপস দাশগুপ্তের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। বারাসতের তৃণমূল সাংসদ তথা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি কাকলি ঘোষদস্তিদার জানান, ইস্তফাপত্র গৃহীত হয়েছে। অশনি ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছেন। পরবর্তী পুরপ্রধান কে হবেন, তা ঠিক করবে বোর্ড অফ কাউন্সিল। তৃণমূলের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে কারও নাম বলা না হলেও, পরবর্তী পুরপ্রধান হিসাবে সুনীল মুখোপাধ্যায় এগিয়ে রয়েছেন বলে দাবি শাসকদলের সূত্রে। সুনীল আগেও বারাসতের পুরপ্রধান ছিলেন।
গত লোকসভা নির্বাচনে শহুরে ভোটে বড় রকমের ধাক্কা খেয়েছিল তৃণমূল। শহরাঞ্চলের সেই ‘ক্ষত’ মেরামতের জন্য সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ‘দক্ষতা ও কর্মক্ষমতাকে’ বিচার করে অনেক দিন ধরেই পুর-প্রশাসনে রদবদলের ভাবনা চলছিল শাসকদলের অন্দরে। তার ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন অভিষেক।
গত কয়েক মাস ধরে জেলা ও ব্লক স্তরে পরিবর্তনের কাজ চলেছে তৃণমূলে। শাসকদল সূত্রে খবর, এ বার পুর-প্রশাসনেও ‘ব্যর্থ’ পদাধিকারীদের সরিয়ে দিতে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের মাপকাঠিও স্পষ্ট করে দিতে চাইছেন তাঁরা।
তৃণমূল সূত্র জানিয়েছে, গত এক দেড় মাস ধরে পুর এলাকায় ঘুরে ঘুরে পুরপ্রধান, উপপুরপ্রধান ও পুরপ্রতিনিধিদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করে নানা তথ্য সংগ্রহ করেছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তৃণমূলের ভোট কুশলী সংস্থার প্রতিনিধিরাও খোঁজখবর নিয়েছেন। কলকাতায় একাধিক পুর প্রতিনিধিকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। পুরসভায় পুরপ্রধানদের কাজ, দলের সঙ্গে সম্পর্ক, শহর রাজনীতিতে কোন পুরপ্রধানের কতটা প্রভাব, এ সব তথ্যও সংগ্রহ করা হয়েছিল। তা ছাড়া গত লোকসভা ভোটে ফলাফলও খতিয়ে দেখা হয়েছে। তার ভিত্তিতেই এই রদবদল বলে মনে করা হচ্ছে।