পাথরবোঝাই ট্রাকের ধাক্কা পুলকারে, জখম ১০ পড়ুয়া-সহ এগারো জন

এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, ট্রাকটি ‘ওভারলোড’ থাকায় সেটিকে পুলিশের গাড়ি ধাওয়া করে। পুলিশকে এড়াতে গিয়েই পুলকারে ধাক্কা মারে ট্রাকটি। যদিও পুলিশের দাবি, একটি গাড়িকে পাশ কাটাতে গিয়ে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁকসা শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:০২
Share:

দুর্ঘটনার পরে পুলকারটি। এই পুলকার নিয়ম মেনে চলছিল কি না, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। নিজস্ব চিত্র

পাথরবোঝাই ট্রাক ধাক্কা মারল পুলকারে। আর তার জেরে জখম হয় দশ জন পড়ুয়া-সহ এগারো জন। বুধবার সকালে কাঁকসার মুচিপাড়া-শিবপুর রাস্তার ঘটকডাঙা লাগোয়া এলাকার ঘটনা। এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, ট্রাকটি ‘ওভারলোড’ থাকায় সেটিকে পুলিশের গাড়ি ধাওয়া করে। পুলিশকে এড়াতে গিয়েই পুলকারে ধাক্কা মারে ট্রাকটি। যদিও পুলিশের দাবি, একটি গাড়িকে পাশ কাটাতে গিয়ে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, এ দিন সকাল ৭টা নাগাদ কাঁকসার বিষ্ণুপুর গ্রাম থেকে পুলকারে করে দোমড়া রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম বিদ্যাপীঠের দশ জন পড়ুয়াকে স্কুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন চালক দিলীপ বাগদি। স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণ বাগদি, মহেশ বাউরিদের দাবি, পাথরবোঝাই ট্রাকটি দ্রুত গতিতে আসছিল। মলানদিঘি লাগোয়া ওই এলাকায় অন্য একটি গাড়িকে ট্রাকটি পাশ কাটায়। তার পরে ট্রাকটি পুলকারের পিছনে ধাক্কা মারে। এর পরেই পুলকারটি রাস্তার বাঁ দিকে থাকা একটি গাছে ধাক্কা মারে। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ডান দিকে জঙ্গলের কাছে নেমে যায় ট্রাকটিও। সেটিতে আগুন ধরে যায়। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে
আগুন নেভায়।

ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় আসে মলানদিঘি ফাঁড়ির পুলিশ। জখম পড়ুয়াদের ও চালককে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে চার পড়ুয়াকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে ছ’জন পড়ুয়া ও গাড়ির চালককে দুর্গাপুরের বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অষ্টম শ্রেণির মৌমিতা সাহার চোট গুরুতর। তাকে আইসিইউয়ে রাখা হয়েছে। চতুর্থ শ্রেণির শান্তনু রায়ের পায়ে এ দিন অস্ত্রোপচার করা হয়। চিকিৎসাধীন বাকি পড়ুয়া ও চালকও কমবেশি জখম বলে জানান দোমড়া রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম বিদ্যাপীঠের শিক্ষক সুব্রত ঘোষ।

Advertisement

এ দিনের দুর্ঘটনার পরে এলাকাবাসীর একাংশ পথ অবরোধ করে পুলিশের বিরুদ্ধে টাকা তোলার অভিযোগ করেন। স্থানীয় বাসিন্দা মানস ঘোষ, তুহিন মণ্ডলদের অভিযোগ, ‘‘ফি দিন রাস্তার উপরে পুলিশের জুলুম চলে। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে ট্রাক চালকেরা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। ফলে এ দিনের মতো প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।’’

অবরোধের পরে এলাকায় আসে পুলিশের বিশাল বাহিনী। টাকা তোলার অভিযোগকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের সঙ্গে পুলিশকর্মীদের কথা কাটাকাটিও হয় বলে জানান এলাকাবাসী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন মলানদিঘি পঞ্চায়েতের প্রধান পীযূষ মুখোপাধ্যায়। তিনি জখমদের উদ্ধারকাজেও হাত লাগান। পরে পুলিশের আশ্বাসে প্রায় আড়াই ঘণ্টা পরে অবরোধ তোলেন স্থানীয়রা। তবে পুলিশি ‘জুলুম’-এর অভিযোগ অস্বীকার করে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘পুলিশের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। কী করে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে তা তদন্ত করে
দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন