জলে না নামার জন্য অনুরোধ। মঙ্গলবার দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র
বর্ষশেষের সন্ধ্যায় সোমবার দুর্গাপুরের রাস্তায় ঢল নেমেছিল। মত্ত আচরণ, বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানো, ইভটিজিংয়ের চেষ্টা-সহ নানা অভিযোগে ১১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদী বলেন, “সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছিল। কোনও রকম বেচাল দেখলেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’
পুলিশ জানায়, সোমবার বিকেল থেকে সিটি সেন্টারের শপিং মলগুলিতে ব্যাপক ভিড় জমে। পার্কে যাওয়ার ভিড় তো ছিলই। পরিস্থিতি আরও জটিল হয় সন্ধ্যা নামতেই। বিশেষ করে সিটি সেন্টার এলাকায় এক ধাক্কায় ভিড় বেড়ে যায়। কারণ, বিভিন্ন হোটেলের বর্ষবরণ পার্টিতে যোগ দিতে গাড়ি নিয়ে আসতে শুরু করেন অনেকে। শুধু শহর নয়, শহরের বাইরে থেকেও অনেকে এই সব পার্টিতে যোগ দেন। আবার অনেকে রেস্তরাঁয় রাতের খাবার খেতেও বেরিয়েছিলেন। এক সময়ে ক্ষুদিরাম সরণির মোড়ে দাঁড়িয়ে পড়ে বহু গাড়ি। তবে বিকেল থেকেই পুলিশ এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় ট্র্যাফিক চলাচল একমুখী করে দেওয়ায় বড় যানজট হয়নি।
পুলিশের কড়া পাহাড়া ছিল প্রায় সর্বত্রই। ছিলেন সাদা পোশাকের মহিলা পুলিশকর্মীরাও। পুলিশের দাবি, মত্ত আচরণ, ইভটিজিংয়ের চেষ্টা বা বেপরোয়া গাড়ি চালানো, সবক্ষেত্রেই অত্যন্ত দ্রুত পদক্ষেপ করা হয়েছে। সিটি সেন্টারের ভিড় সামলাতে এলাকার বিভিন্ন মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এ ছাড়া ‘ফ্লাইং স্কোয়াড’ও ছিল। অভিযোগ পেলেই ঘটনাস্থলে দৌড়েছে
সেই স্কোয়াড।
পুলিশ জানায়, শেষমেশ এ দিন নানা অভিযোগে গভীর রাত পর্যন্ত মোট ১১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাঁদের জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়। তুলনায় কম সমস্যা তৈরির অভিযোগ থাকায় রাস্তাতেই সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয় আরও অনেককে। সব মিলিয়ে বর্ষশেষের রাত নির্বিঘ্নেই কাটল দুর্গাপুরে। কোনও দুর্ঘটনারও খবর ছিল না। তবে শহরের বিভিন্ন পাড়ার ক্লাবে সাউন্ড বক্সের চড়া আওয়াজে বিরক্ত হয়েছেন অনেকেই। প্রায় ভোর রাত পর্যন্ত বেনাচিতির বিভিন্ন জায়গায় সাউন্ড বক্স বেজেছে। খুব জোরাল শব্দে না হলেও রাত ১২ টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লাগাতার বেনাচিতির নানা এলাকায় বাজিও ফেটেছে। তবে দূষণ লাগামছাড়া হয়নি বলেই দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে।
সোমবারের পরে মঙ্গলবারও ছিল উৎসবের মেজাজ। দুর্গাপুর ব্যারাজের সামনে পিকনিক করতে দেখা যায় বহু মানুষকে। পুলিশ-প্রশাসনের তরফে বার বার অনুরোধ করা হয় জলে না নামার জন্য।