চুলের ক্লিপ দিয়ে তালা খুলে হোম থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিল দুই নাবালিকা। যদিও কিছুদূর গিয়েই ধরা পড়ে যায় পুলিশের হাতে। হোমে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয় দু’জনকেই।
বর্ধমান শহরের ঢলদিঘির ওই সরকারি হোমের কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই দু’জনের এক জনকে দিন দশেক আগে বর্ধমান জিআরপি চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেয়। সে পুলিশকে জানিয়েছিল, তার বাড়ি গুজরাটে। কিন্তু পুরো ঠিকানা জানা যায়নি। আরেক জন মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা। গত রবিবার বাড়ি থেকে কাটোয়া এসেছিল সে। স্টেশনে জিআরপির কাছে সব কিছু ছিনতাইয়ের অভিযোগ জানায়। পরে চাইল্ড লাইনের মাধ্যমে বর্ধমানে হোমে আসে মঙ্গলবার।
যদিও দুই নাবালিকা বর্ধমান থানার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছে, হোমে তাঁদের মারধর করা হত। খেতে দেওয়া হত না। অন্ধকার ঘরে আটকে রাখা হতো। শুধু তাই নয়, হোমের নানা কাজ তাঁদের দিয়ে করানো হত। যদিও বর্ধমান জেলা সমাজকল্যাণ দফতর এ সব কথা বিশ্বাস করতে নারাজ। ওই দফতরের কর্তাদের দাবি, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ওই দুই নাবালিকা বুধবার রাতে সবাই ঘুমিয়ে যাওয়ার পর চুলের ক্লিপ দিয়ে গেটের দু’টি তালা খুলে বেরিয়ে যাচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাতে টহল চলার সময়ে পুলিশ লাইনের কালীবাড়ির কাছে ওই দুই নাবালিকাকে দেখতে পায় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করতেই কথাবার্তায় অসঙ্গতি ধরা পড়ে। পরে থানায় এনে আরও প্রশ্ন করাতে তারা জানান, ওই হোম থেকে পালিয়ে এসেছে তারা। পুলিশের দাবি, তারা জানিয়েছিল হোমের পাঁচিল টপকে পালিয়ে এসেছে। বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, “হোম থেকে পালানো দু’জন নাবালিকাকে উদ্ধার করা গিয়েছে। কী ভাবে পালিয়েছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
এর আগেও এই হোমের কর্মীদের বিরুদ্ধে আবাসিকদের মারধর, ছ্যাঁকা দেওয়ার মতো অভিযোগ উঠেছে। কোনও সময়েই হোম কর্তৃপক্ষ অভিযোগ স্বীকার করেননি। এ দিনও ওই নাবালিকাদের অভিযোগ মানতে চাননি শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সুদেষ্ণা মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “হোম থেকে পালিয়ে গেলেই একই ধরনের অভিযোগ তোলে মেয়েরা। আমরা বারেবারে তদন্ত করে দেখেছি অভিযোগগুলির সারবত্তা নেই। নিয়মিত পরিদর্শন চলে।’’ তবে সুরক্ষার বিষয়ে আরও খেয়াল রাখা হবে বলেও তাঁর দাবি।